আদালতের পেশকার আবু আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতের নির্দেশে বাদীকে ডেকে তার স্বাক্ষর নিয়ে খায়রুল হকের নাম বাদ দেওয়া হয়।”
Published : 21 Aug 2024, 03:16 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুরের র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে এক বেসরকারি কোম্পানির অফিস সহায়ককে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, সেখান থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
নিহত ফিরোজ তালুকদারের স্ত্রী রেশমা সুলতানা বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসানের আদালতে এ মামলার আবেদন করেন।
তার আবেদনে তখন পাঁচজনকে আসামি করার কথা বলা হয়েছিল। শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম ছিল সেখানে।
বাদীর জবানবন্দি শুনে বিচারক মো. মেহেদী হাসান মৌখিক আদেশে মিরপুর মডেল থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু দুই ঘন্টা পরে বিচারপতি খায়রুল হককে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এ আদালতের পেশকার আবু আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতের নির্দেশে বাদীকে ডেকে তার স্বাক্ষর নিয়ে খায়রুল হকের নাম বাদ দেওয়া হয়।”
মামলার আর্জিতে বলা হয়, এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি থাকাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্য সব আইনজীবী তথা এমিকাস কিউরিদের মতামত উপেক্ষা করে একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। তার সেই রায় দেশে ‘অঘোষিত স্বৈরতন্ত্র’ কায়েম করে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের যথেচ্ছভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়।
২০১৪ ও ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা ও অন্য আসামিরা কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে মানুষের ওপর ‘জুলুম, নির্যাতন ও বাক স্বাধীনতা খর্ব করাসহ খুন, গুম ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে’ মানুষ হত্যা ও নিষ্পেষণ অব্যাহত রাখে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে সরকার ‘হত্যা, গুম ও গ্রেপ্তারের’ মাধ্যমে দমনপীড়ন চালায়। শেখ হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নির্দেশে পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ কিছু ‘বিপথগামী’ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা দেশব্যাপী আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে গুলি করতে থাকে।
১৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফিরোজ তালুকদার মিরপুর-১০ গোলচত্বর পার হওয়ার সময় র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছাত্রজনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট শেষ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তার বিরুদ্ধে মোট ২৫টি মামলা হয়েছে এর আগে, যার বেশিরভাগই হয়েছে ঢাকায়।