অবরোধে ঢাকা অচল হয়ে পড়ায় নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে ফ্লাইট ধরা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয় যাত্রীদের মধ্যে।
Published : 10 Jul 2024, 09:47 PM
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অবরোধের মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সময়মতোই সব ফ্লাইট ছেড়ে গেছে বলে তথ্য দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার অবরোধে ঢাকা অচল হয়ে পড়ায় নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে ফ্লাইট ধরা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয় যাত্রীদের মধ্যে।
তবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বুধবার রাতে বলেন, উদ্বেগ থাকলেও কোনো সমস্যা হয়নি।
তিনি বলেন, “অবরোধের বিষয়টি সামনে রেখে তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তর ট্রাফিক বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। এয়ারলাইন্সগুলো তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তারা যাত্রীদের যথাসময়ে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে।”
“সব যাত্রী যেন ফ্লাইট ধরতে পারেন, সেজন্য এয়ারলাইন্সগুলো চেষ্টা করেছে। যে কারণে বিমানবন্দরের ফ্লাইট শিডিউলের সুনির্দিষ্ট পরিবর্তনের ঘোষণা আসেনি।”
‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির মধ্যে বুধবার সকাল থেকে অনেকেই ফেইসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট দিয়ে ঢাকার রাস্তাঘাট সম্পর্কে তথ্য চান, কেউ আগেভাগে বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায় গিয়ে ওঠেন।
একদল আন্দোলনকারী মহাখালীর আমতলী মোড় অবরোধ করায় এয়ারপোর্ট রোডে যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছিল। বেলা ৩টার আগে তারা রাস্তা ছেড়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয় বলে তথ্য দেন ডিএমপির গুলশান ট্রাফিক বিভাগের এডিসি এসএম হাফিজুর রহমান।
আরও পড়ুন:
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, তারা চাইলেও যাত্রীর জন্য ফ্লাইট দেরি করাতে পারেন না, এটা অনেক কঠিন কাজ। কারণ একটি ফ্লাইটে অনেক কানেকটিং যাত্রী থাকেন, যাদের অন্য বিমানবন্দরে নেমে আরেক গন্তব্যের ফ্লাইট ধরতে হয়। এখানে বিলম্ব হলে ওখানে তারা ফ্লাইট না পাওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে যান।
বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত কমিশনার) মনিবুর রহমান বলেন, এয়ারপোর্টে যেতে পারছেন না- এ রকম অভিযোগ নিয়ে কোনো যাত্রী তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। যেসব জায়গায় অবরোধ রয়েছে, তারা চেষ্টা করছেন, তার আশপাশে বিকল্প সড়কগুলো চালু রাখতে।
চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বুধবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষিত তরুণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা থেকে সারা দেশ প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বুধবার আন্দোলন চলমার মধ্যে সর্বোচ্চ আদালত কোটা পুনর্বহালের হাই কোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা জারি করে। তবে সংসদে আইন পাস করে কোটাব্যবস্থার ‘যৌক্তিক’ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।
তাদের দাবি, শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে সকল ধরনের কোটা বাতিল করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা জারির আদেশের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার দুপুরে শাহবাগ মোড়ে অবরোধ কর্সূচি থেকে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৃহস্পতিবারও আন্দোলন নিয়ে রাজপথে থাকবেন কোটাবিরোধীরা।