অনুমতি ছাড়া চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে খাওয়ালে দুই মাসের কারাদণ্ডের সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।
Published : 06 Apr 2023, 06:38 PM
চিড়িয়াখানায় গিয়ে প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলে, কিংবা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে আইন করার জন্য একটি বিল তোলা হয়েছে সংসদে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বৃহস্পতিবার ‘চিড়িয়খানা বিল ২০২৩’ সংসদে উত্থাপন করেন। পরে বিলটি ৩৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
এ আইন পাস হওয়ার পর চিড়িয়াখানায় গিয়ে প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলে দুই হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে।
কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে কোনোভাবে আঘাত বা জখম করলে বা কিউরেটরের নির্দেশনা অমান্য করে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
সেজন্য দুই মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অপরাধের বিচার করা যাবে।
বিলটি পাস হলে দেশের সরকারি সব চিড়িয়াখানা এ আইনে পরিচালিত হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো দর্শনার্থী প্রবেশ ফি ছাড়া চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলে তার কাছ থেকে প্রবেশ ফির সমপরিমাণ মূল্য আদায় করা হবে। মাত্রা বিবেচনা করে দুই হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে।
বিলে বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণী বয়সজনিত কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়লে, সংক্রামক কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে অন্য কোনো প্রাণীর জীবন ঝুঁকিতে পড়লে বা জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি হলে সেই প্রাণীর ‘ব্যথাহীন মৃত্যু’ ঘটানো যাবে।
চিড়িয়াখানায় কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই একই প্রজাতির একই লিঙ্গের একটি প্রাণী রাখা যাবে না। ভেটেরিনারি কর্মকর্তার নির্দেশনা ছাড়া প্রকৃতিগত কারণে দলবদ্ধভাবে অবস্থানকারী প্রাণীদের মধ্য থেকে কোনো প্রাণীকে আলাদা বা এককভাবে রাখা যাবে না।
প্রাণীর প্রকৃতি বিবেচনা করে ন্যূনতম প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সুবিধাসম্পন্ন খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত রাখতে হবে। প্রাণীর প্রকৃতিগত আচরণ, সংশ্লিষ্ট প্রাণীর লালন-পালনে নিয়োজিত ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে প্রাণীর খাঁচার অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।
কোনো বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য সরকার এক বা একাধিক চিড়িয়াখানা নির্দিষ্ট করতে পারবে।
বিলে বলা হয়েছে- চিড়িয়াখানায় অবস্থিত প্রাণীর দেহে যেসব রোগ-জীবাণু প্রাণী থেকে প্রাণীতে বা মানুষে সংক্রমণযোগ্য, সেসব রোগ-জীবাণু বা পরজীবীর সীমা বা মাত্রা নির্ণয়ের জন্য প্রযোজ্যতা অনুযায়ী নিয়মিতভাবে প্রত্যেক প্রাণীকে পরীক্ষা করে প্রাপ্ত তথ্য প্রত্যেক প্রাণীর জন্য বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো চিড়িয়াখানায় বিদেশি প্রজাতির বন্য প্রাণী কেনা, বিনিময়, উপহার হিসেবে বা অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করা যাবে না। চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে লোকালয়ে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।