শনিবার সকালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পরীক্ষা পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে লাগাতার অবরোধ ও হরতাল আহ্বানকারী ২০ দলের প্রতি এ আহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “রোববার হরতাল ছিল না। আবার হরতাল দেবে, এটা আশা করি না। হরতাল আহ্বানকারী নেতৃবৃন্দকে করজোড়ে বলছি- আজকের দিন এখনও বাকি আছে। আপনারা দয়া করুন। বিকালের মধ্যে দেশবাসীকে আনন্দের সংবাদ দিন। হরতাল প্রত্যাহার করুন।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া সহযোগিতা করুন। প্রতি সপ্তাহে দুই-তিন দিনের বেশি পরীক্ষা নেই। পরীক্ষার দিন হরতাল দেবেন না। অন্যদিন হরতাল দিন।”
গত এক মাস ধরে লাগাতার অবরোধের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট হরতালও দেওয়ার এবার এসএসসি পরীক্ষা শুরুতেই জটিলতায় পড়েছে।
হরতালের কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে শুক্রবার থেকে তা শুরু হয়েছে। এদিকে রোববার থেকে ৭২ ঘণ্টা হরতালের ঘোষণা আসায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
হরতাল প্রত্যাহার না করলে কী হবে- জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এখনও সময় আছে। আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখব। আশা করছি, তারা হরতাল প্রত্যাহার করবে।
“দেশে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের মিলিয়ে আরো এক কোটি। দেশের সবচেয়ে বড় পরিবার শিক্ষা পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন আমরা ছেলেমেয়েদের রক্ষা করতে চাই। আশা করি তাদের (বিএনপি জোট) মন নাড়া দিবে। আল্লাহর রহমতে তাদের মনে দ্বীন-রহম-দয়া আসবে।”
হরতালের মধ্যেও পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল জানিয়ে নাহিদ বলন, “কর্মসূচি ভেঙে আমরা পরীক্ষা নিতে পারতাম। কিন্তু হিংস্রতার মুখে আমরা ছেলেমেয়েদের ঠেলে দিতে পারি না।”
চলমান সংকট নিরসনে সরকার কোনো উদ্যেগ নেবে কি না- জানতে চাওয়া হলে সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যান নাহিদ।
তবে চলমান আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই কয়দিন যা চলছে, তা কোনো আন্দোলন না। এটা আন্দোলনের দেশ। আমরা আগেও অনেক আন্দোলন দেখেছি। হাজার-হাজার মানুষ মহাসড়কে অবস্থান নেবে। কিছুই চলবে না তবেই অবরোধ হয়।
“এখন হরতাল-অবরোধ শুধু প্রচারের মাধ্যমে। পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা বড় পৈশাচিক অমানবিক নৃশংস।”
কলেজিয়েট স্কুলের কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে শিক্ষামন্ত্রী সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান।
আরেক অভিভাবক আফসার উদ্দিন মন্ত্রীকে বলেন, “আপনি পরীক্ষার্থীদের দেখতে এসেছেন এজন্য আমরা খুশি। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখবেন।”
এসময় মন্ত্রী বলেন, “এত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিচ্ছে। তাই আমরা আপনাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে এসেছি।”
সবশেষে মন্ত্রী বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) স্কুল ও কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহজাহানসহ বোর্ড কর্মকর্তারা।