হালনাগাদে আর বাড়ি-বাড়ি না যাওয়ার চিন্তা

বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রচলিত বিধান পরিবর্তনের কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2014, 07:40 PM
Updated : 16 Nov 2014, 07:40 PM

সেক্ষেত্রে ভোটারযোগ্য নাগরিকের বছরের যে কোনো সময় উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ থাকবে।

২০১৭ সাল থেকে এ ধরনের বিধান রেখে আইন সংশোধনের প্রস্তাবনা রাখা হবে বলে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন।

তিনি রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের প্রস্তাবনা রয়েছে প্রতি বছর বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি আগামীতে কন্টিনিউ করা হবে না। যোগ্যরা লোকাল সার্ভারে গিয়ে তথ্য ফরম পূরণ করবে। সারা বছর কাজটি চলবে।”

বিদ্যমান ভোটার তালিকা আইনে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বিধান রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে ইসির তথ্য সংগ্রহকারীরা প্রতিটি বাড়ি গিয়ে ভোটের যোগ্যদের তথ্য নেন। প্রতিবছর এ তালিকা হালনাগাদও হয়।

নবম সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সর্বশেষ ২০০৮ সালে প্রণীত হয় ছবিসহ ভোটার তালিকা। নাগরিকদের অন্তত ৩৩টি তথ্য সম্বলিত একটি তথ্যভাণ্ডারও গড়ে তোলা হয়েছে।

ইতোমধ্যে পাঁচশ’রও বেশি উপজেলায় সার্ভার স্টেশন স্থাপনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নির্বাচন কমিশন।

ইসি সচিব বলেন, “ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের প্রক্রিয়া তরান্বিত করার কাজ চলছে। সেন্ট্রাল সার্ভারের সঙ্গে লোকাল সার্ভারের সংযোগ হয়ে গেলেই বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বিধান বাদ দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন

“আমাদের বাস্তবতা ভাবতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে গত বছর হালনাগাদ করতে পারিনি। সব সময় হালনাগাদ যথাসময়ে নাও হতে পারে। এজন্য বাড়ি-বাড়ি না গিয়ে সার্ভার স্টেশনে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কথা ভাবা হচ্ছে।”

সিরাজুল ইসলাম বলেন, “মাঠপর্যায়ে সব স্টেশন পুরোপুরি কার্যকর ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে আইন সংশোধন করতে আরো অন্তত দুই বছর লাগতে পারে।

“২০১৭ সাল নাগাদ উপজেলা সার্ভার স্টেশনে এসে ভোটার করার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। প্রয়োজন হলে প্রতি নির্বাচনের আগে বা ৩ থেকে ৫ বছর পর একবার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সুযোগ রাখা যেতে পারে।”

এ ধরনের প্রস্তাবনা পর্যালোচনার পর বাস্তবসম্মত বিবেচিত হলেই তা পরবর্তীতে কার্যকর হতে পারে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রচারণার পরও বাড়েনি নারী ভোটার

ভোটার তালিকায় নারী ও পুরুষ ভোটার প্রায় সমান থাকলেও এবারের তালিকা হালনাগাদে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা ৮ শতাংশ কম হয়েছে।

এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ব্যাপক প্রচারণার পরও এবার হালনাগাদে নারী ভোটারদের সাড়া মেলেনি। তবে ঢাকা সিটি করপোরেশনে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার বেড়েছে।”

গত ১৫ মে থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ চলে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এসময় দেশজুড়ে ৫১ লাখ ১৭ জন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ হয়। তবে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন ৪৭ লাখ ৩৫ হাজার ১০৪ জন।

ইসি সচিব জানান, নিবন্ধিতদের মধ্যে পুরুষ ২৬ লাখ ৪৬ হাজার ৬৫৯ এবং নারী ২০ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪৫ জন। অর্থাৎ পুরুষ ৫৫ দশমিক ৮৯ ও নারী ৪৪ দশমিক ১১ শতাংশ।

অথচ হালনাগাদ শুরুর আগে মে মাসে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৬৪১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ছিল ৪ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার ২২০ এবং নারী ভোটার ছিল ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার ৪২১ জন।

এক্ষেত্রে পুরুষ ৫০ দশমিক ১৬ শতাংশ আর নারী ৪৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ ছিল।

ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, “আগামী ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর দাবি, আপত্তি ও নিষ্পত্তি শেষে ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।”