মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সনদও পরীক্ষা হবে

নতুন সংজ্ঞার আলোকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুক্তিযোদ্ধা সনদও যাচাই করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2014, 05:30 PM
Updated : 13 Oct 2014, 05:30 PM

তবে বর্তমানে কতজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ রয়েছে বা মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখিয়ে কতজন চাকরির বয়স বাড়িয়েছেন সেই তথ্য সরকারের কাছে নেই।

সাধারণ সরকারি কর্মচারীরা ৫৯ বছর পর্যন্ত চাকরি করতে পারলেও মুক্তিযোদ্ধারা আরো এক বছরে বেশি চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিরাও সরকারি চাকরিতে কোটা ভোগ করে আসছেন।

চাকরির বয়স বাড়াতে অনেক সরকারি কর্মকর্তা প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

চার জন সচিব ও এক যুগ্ম-সচিব জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছেন বলে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

সোমবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণের পর মোজাম্মেল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি-আধা সরকারি কর্মকর্তাসহ সবার ক্ষেত্রে একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মুক্তিযোদ্ধার সনদ যাচাই করা হবে।

“যারা বর্তমানে ৪৩ বছরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, তারা কিন্তু তখন ১৫-১৬ বছরের ছিলেন। কিন্তু এই সংখ্যাটা কত?”

“৪৩ বছর আগে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন না। তাই অন্য ১০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে উপজেলা কমিটি যেভাবে যাচাই করবে তাদেরও তারাই (উপজেলা কমিটি) একইভাবে যাচাই করবে।”

“সেই দিন আমি মন্ত্রী ছিলাম না। এখন যে সচিব সে সচিব ছিলেন না। যে ভিসি হয়েছেন সে ভিসি ছিলেন না। তাই সবার জন্যই একই ব্যবস্থা।”

এক উপজেলায় একই দিনে সব মুক্তিযোদ্ধদের যাচাই-বাছাই করা হবে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

নতুন সংজ্ঞায় একাত্তরে ১৫ বছরের কম বয়সীরা মুক্তিযোদ্ধা সনদ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবেন না।    

মন্ত্রী বলেন, নতুন সংজ্ঞার আলোকে যেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই করা হবে তার কমপক্ষে ২১ দিন আগে গণমাধ্যমে (কমপক্ষে ছয়টি দৈনিকে) বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এটা প্রচার করা হবে। কবে, কখন, কোন উপজেলায়, কোন সময় যাচাই-বাছাই করা হবে সে বিষয়ে গণ-নোটিস দেওয়া হবে।

উপজেলা পর্যায়ে সাত সদস্যের একটি কমিটি মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হলে তিনি ওই কমিটির সভাপতি হবেন। আর স্থানীয় সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা না হলে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে মন্ত্রণালয় সভাপতি হিসাবে নিয়োগ দেবে।

মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ও জেলা কমান্ড কাউন্সিলের একজন করে প্রতিনিধি এই কমিটিতে থাকবেন।

এছাড়া কমিটিতে উপজেলা কমান্ডারের সঙ্গে সদস্য হিসাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন আরেকজন কমান্ডার মন্ত্রণালয় ঠিক করে দেবে বলেও জানান মোজাম্মেল।

কমিটিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের পক্ষ থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। ইউএনও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।

মন্ত্রী বলেন, “যত রকমের তালিকা হয়েছে লাল মুক্তিবার্তাকে বেইজ লাইন ধরা হয়েছে। এর বাইরে যত তালিকা হয়েছে সবগুলোই যাচাই-বাছাই করা হবে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই কাজটি শেষ করব।”