ইজাহারের মাদ্রাসায় তল্লাশি করে অ্যাসিড উদ্ধার

হেফাজত নেতা মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী পরিচালিত মাদ্রাসায় সাড়ে তিন ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে ১৮ বোতল পিকরিক এসিড জব্দ এবং পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

উত্তম সেনগুপ্তবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2013, 04:59 PM
Updated : 7 Oct 2013, 04:59 PM

তবে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি ইজাহার ও তার ছেলে হারুণ বিন ইজাহারকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। 

আটক পাঁচ জন হলেন- মাদ্রাসার ডাইনিং সুপার মুনির হোসেন, মাদ্রাসার তিন শিক্ষক তাফসির আহমদ, আবদুল মান্নান ও মো. ইসহাক এবং শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান।

এর আগে আহতাবস্থায় নগরীর দুটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সোমবার সকালে বিস্ফোরণের পর বিকালে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনারসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় লালখান বাজারের ওই মাদ্রাসায় তল্লাশি শুরু হয়।

রাত ১০টায় অভিযান শেষে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এতে ১৮ বোতল এসিড জব্দ ও পাঁচজনকে আটক করা হয়।

মুফতি ইজাহার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাদ্রাসা এলাকায় ছিলেন এমন তথ্য ছিল বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন। তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।  

মুফতি ইজাহারকে সরে যেতে সহায়তা করা হয়েছে কি না- প্রশ্ন করা হলে পুলিশ কর্মকর্তা শহীদ বলেন, “অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং মাদ্রাসাটি নজরদারিতে থাকবে।”

এর আগে অভিযান চলাকালে রাত ৮টার দিকে মাদ্রাসার ভেতর অবস্থিত মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল মুফতি ইজাহারের অফিস থেকে ১৮ বোতল পিকরিক এসিড উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ জানায়।

উদ্ধার করা বোতলের গায়ে মেইড ইন ইন্ডিয়া এবং এক্সপ্লোসিভ লেখা আছে, বলেন এডিসি শহীদ।

সকাল ১১টার দিকে লালখান বাজার মাদ্রাসা নামে পরিচিত ওই মাদ্রাসার চার তলা একটি ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাঁচ জন আহত হয়।

বিস্ফোরণের পর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কম্পিউটারের ইউপিএস বা আইপিএস বিম্ফোরিত হয়েছিল বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে।

বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দমকল বাহিনী আগুন নেভানোর পর ছাইয়ের নিচে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরক পাওয়া গেছে।

“আমরা নিশ্চিত এখানে বিস্ফোরক দ্রব্যের বড় মজুদ ছিল। হাতে তৈরি শক্তিশালী কিছু গ্রেনেডও এখানে রয়েছে। এগুলো বেশ বিপজ্জনক।”

এরপর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “বোমা তৈরির সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছি। ছাত্রাবাস থেকে তিনটি তাজা হ্যান্ড গ্রেনেড ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।”

এদিকে রাতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ তল্লাশি শুরু করার পর মাদ্রাসা থেকে কাউকে বের হতে দেয়া হয়নি।

বিস্ফোরণের পর দুপুরে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মুফতি ইজাহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের ইউপিএস বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।

বিস্ফোরণের পর এ বিষয়ে জানতে মুফতি ইজাহারের ছেলে মুফতি হারুন ইজাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একই কথা বলেন।

তবে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বিস্ফোরণের ওই কক্ষ থেকে গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি ও বোমা নিস্ক্রিয়কারী দল বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামসহ বিস্ফোরণের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।

বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচ জন আহত হওয়ার কথা প্রাথমিক ভাবে জানা গেলেও সর্বশেষ চারজন আহতকে নগরীর পৃথক দুটি হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।