দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব নিলেও প্রকাশে নারাজ ইসি

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের বার্ষিক হিসাব নিলেও তা প্রকাশ করতে চায় না নির্বাচন কমিশন। তাদের বক্তব্য, এটা দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ হিসাব জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2011, 02:18 AM
Updated : 22 July 2011, 02:18 AM
মঈনুল হক চৌধুরী
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
ঢাকা, জুলাই ২২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের বার্ষিক হিসাব নিলেও তা প্রকাশ করতে চায় না নির্বাচন কমিশন। তাদের বক্তব্য, এটা দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ হিসাব জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত ৩৮ দলকে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে ইতোমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগের বছরও দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব নেওয়া হয়েছিলো।
রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব পরবর্তী বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ইসির কাছে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "২০১০ সালের বার্ষিক আর্থিক লেনদেনের (অডিট রিপোর্ট) প্রতিবেদন এ মাসের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দিতে হবে। ইতোমধ্যে দলগুলোকে এ বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।"
দ্বিতীয়বারের মতো দলের আর্থিক লেনদেনের প্রতিবেদন চাইলেও এক বছর ধরে গত বারের কোনো হিসাব প্রকাশ করেনি ইসি; যদিও ইসি আগে বলেছিলো, দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিবন্ধিত অডিট প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে তা কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা এখন বলছেন, আয়-ব্যয়ের এ হিসাব দলগুলোর নিজস্ব সম্পদ বা দলিল। তা প্রকাশের এখতিয়ার কমিশনের নেই।
"দলগুলোর কাছে আপনার হিসাব চাইতে পারেন, তারাও লেনদেনের হিসাব প্রকাশ করতে পারে", সাংবাদিকদের বলেন তিনি।
সিইসির এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কমিশনে জমা পড়ার পর ওই হিসাব জনগণের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই এটি কোনো গোপন বিষয় নয়।
"জনসমক্ষে প্রকাশ না করলে দলগুলোর হিসাব নেওয়াটাও অর্থহীন হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে দলের ভেতরেও স্বচ্ছতা আনতে হবে। ইসিকে ওই হিসাব ভালো করে খতিয়ে দেখতে হবে", বলেন তিনি।
আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে প্রথমবার দলগুলো 'গোঁজামিল' দিয়ে হিসাব জমা দিয়েছে বলে মনে করেন অবসরপ্রাপ্ত মহাহিসাব নিরীক্ষক হাফিজ।
তিনি বলেন, দলগুলো কমিশনে যে হিসাব জমা দিয়েছে, সেটা আর্থিক বছরের করযোগ্য কোনো হিসাব নয়। তারা স্বচ্ছতার জন্য পঞ্জিকা বছরের হিসাব জমা দিয়েছে।
এদিকে দলের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশের বিরোধিতা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো থেকেও। জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "গণমাধ্যম বা কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কী তার হিসাব প্রকাশ করে?"
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/আরআরডি/এমআই/১৩৫০ ঘ.