হাদিসুর ফিরলেন, কফিনবন্দি হয়ে

ইউক্রেইনে যুদ্ধের মধ্যে বন্দরে আটকে থাকা জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলায় নিহত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের মরদেহ দেশে পৌঁছেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2022, 06:48 AM
Updated : 14 March 2022, 09:08 AM

তার কফিন নিয়ে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের  একটি ফ্লাইট সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকায় পৌঁছায় বলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল আহসান জানান।

হাদিসুরের কফিনবন্দি মরদেহ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পরিবারের সদস্য আর স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।

হাদিসুরের মরদেহ রোববার দেশে পৌঁছানোর কথা থাকলেও বিরূপ আবহাওয়ায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সের কার্গো ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়।

 

ইউক্রেইনের ওলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা অবস্থায় ২ মার্চ রকেট হামলার শিকার হয় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। তাতে নিহত হন ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর।

পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নাবিকদের বাংলার সমৃদ্ধি থেকে নামিয়ে আনা হয়। সেখান থেকে একটি শেল্টার হাউজের বাংকারে ঠাঁই নেন নাবিকরা। হাদিসুরের মরদেহও রাখা হয়েছিল বাংকারের ফ্রিজারে।

উদ্ধার পাওয়ার তিন দিন পর দেশে ফেরার উদ্দেশে মলদোভা হয়ে ২৮ নাবিক রোমানিয়ায় পৌঁছান। বাঙ্কার পর্যন্ত সহকর্মীর মরদেহ নিয়ে গেলেও সেখান থেকে আর তা সঙ্গে আনতে পারেনি তারা। রোমানিয়া থেকে গত ৯ মার্চ তারা দেশে ফেরেন।

তাদের দেশে ফেরার খবরে ওইদিন বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন হাদিসুরের পরিবারের সদস্যরা। তারা আকুতি জানান দ্রুত তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য।

সরকার আর প্রবাসীদের চেষ্টায় শুক্রবার ভোরে ইউক্রেইন থেকে রওনা হয়ে হাদিসুরের লাশবাহী গাড়ি রাতে প্রতিবেশী দেশ রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছায়। সেখান থেকে টার্কিশ এয়ারওয়েজের একটি কার্গো ফ্লাইটে তার কফিন পাঠানো হলেও বিরূপ আবহাওয়ায় তা পৌঁছালো এক দিন দেরিতে।  

বরগুনার বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের চার ছেলেমেয়ের মধ্যে হাদিসুর ছিলেন মেজ।

চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২০১৮ সালে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ওঠেন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।

জাহাজের চাকরিতে বছরের একটি বড় সময় থাকতে হয় বাইরে। সবশেষ বাড়ি এসেছিলেন মাস ছয়েক আগে। তবে পরিবারের সঙ্গে কথা হত নিয়মিত। যেদিন জাহাজে রকেট পড়ল, সেদিনও ফোনে মা রাশিদা বেগম আর ছোট ভাই গোলাম রহমান তারেকের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল।

তার মৃত্যুর খবর আসার পর তারেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, দেশে ফিরলেই বাড়ির কাজে হাত দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল হাদিসুরের, স্বপ্ন ছিল পরিবারের জন্য আরও অনেক কিছু করার; সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন তিনি।

বিস্তারিত আসছে