মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, এটা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নয়, বরং এর মাধ্যমে সমাজে ‘বিদ্বেষ ও ঘৃণা’ ছড়াতে পারে।
করোনাভাইরাস বিশ্বে মহামারী বাঁধিয়ে দেওয়ার পর গত বছরের শুরুতে দেশে সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখার পাশাপাশি তাদের বাড়িতে লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
দেড় বছর পর করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বে নতুন করে উদ্বেগ ছড়ানোর পর আবারও সেই ধরনের পদক্ষেপে যাচ্ছে সরকার। আফ্রিকার দেশগুলো থেকে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ওমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের বাড়িতে প্রয়োজন হলে পতাকা টানিয়ে দিতে বলা হবে।
এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আফ্রিকা ফেরত ব্যক্তিদের বাড়িতে লাল পতাকা টানানো হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর দেখে বৃহস্পতিবার প্রতিক্রিয়া জানায় আসক।
সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়, “হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত ও এলাকার জনগণকে সচেতন করতে গিয়ে লাল পতাকা টানানো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নয়, বরং তা সমাজে বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়াতে পারে।”
স্থানীয় প্রশাসনের এই উদ্যোগ ব্যক্তির নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা হুমকির মুখে পড়বে বলেও মনে করছে মা্নবাধিকার সংস্থাটি।
সরকারের উদ্দেশে আসক বলেছে, “করোনার এ দুঃসময়ে সামাজিক সম্প্রীতি ও সংহতি বজায় রাখাও বাঞ্ছনীয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যক্তির জন্য অবমাননাকর কোনো উদ্যোগ নেবেন না। আইসোলেশন ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করবেন, কিন্তু সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়, এমন উদ্যোগ নেবেন না।”
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে আসা সাত ব্যক্তিকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হলেও তাদের কারও বাড়িতে কোনো পতাকা টানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ।
তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তাদেরকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলছি। এই জন্য পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এই সময়টিতে তারা যাতে অন্যান্যদের সাথে না মেশেন, তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিয়েছি।”
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরত ব্যক্তিদের বাড়িতে কোনো পতাকা টানানো হয়েছে কি না- এই প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, “পতাকা টানানো মুখ্য বিষয় না। আমাদের কাছে এমন নির্দেশনা এখনও আসেনি।
“তবে আখাউড়া স্থলবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও যাত্রী পারাপারসহ বাড়তি নজরদারি রাখার বিষয়ে নির্দেশনা এসেছে, সেই বিষয়ে আমরা কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।”