তিনি বলেছেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের জবাবদিহিতার দায়িত্ববোধ থেকে ওই বিচারককে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। আর বিচার বিভাগের কাজেও কোনো হস্তক্ষেপ করেননি।
সম্প্রতি রেইনট্রি ধর্ষণের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার ধর্ষণ প্রমাণে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতার যুক্তি দিয়ে ওই সময়ের পর মামলা না নিতে বলেন পুলিশকে।
তার ওই বক্তব্য ব্যাপক সমালোচনায় পড়ার পর তার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী।
তবে তার আগেই গত রোববার প্রধান বিচারপতি বিচারক কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেন। পরে তাকে আদালত থেকে সরিয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে একটি বিল বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের উপর আলোচনায় জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী আইনমন্ত্রীর পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি দাবি করেন, এটা বিচার বিভাগের উপর এক ধরনের ‘হস্তক্ষেপ’ ছিল।
“একজন আইনমন্ত্রী যদি এভাবে বিচারককে সরাতে অনুরোধ করেন, সেটা তো অনুরোধ থাকে না। এটা পেছনের দরজার একটি নির্বাহী আদেশ হয়ে যায়। এ ধরনের পেছনের দরজার আদেশ বিচার ব্যবস্থার জন্য স্বস্তিদায়ক নয়।”
এর জবাবে আনিসুল হক বলেন, “মাননীয় প্রধান বিচারপতি কাকে সরাবেন, আর কাকে রাখবেন, সেটার সাজেশন আমি করতে পারি না। করিও নাই। বিচার বিভাগের গার্ডিয়ান প্রধান বিচারপতির কাছে আমি ওই (৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেওয়ার পর্যবেক্ষণ) ব্যাপারটি দেখতে বলেছি।
“একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে, সরকারের একজন সদস্য হিসেবে জনগণের কাছে আমার যে জবাবদিহিতার দায়িত্ব রয়েছে, সেই দায়িত্ববোধ থেকেই এটা করেছি। উনারা (বিরোধী দল) যদি বলেন অন্যায় করেছি, বলতে পারেন। কিন্তু জনগণের চোখে আমি অন্যায় করি নাই।”
এক্ষেত্রে রায় নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বলেও জানান তিনি।
“আমি বিচারিক রায়ের ব্যাপারে কোনো কথা বলিনি। আমি সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, উনি বিচার যা করেছেন, রায় দিয়েছেন, সেটা উনার ব্যাপার। সেটা আপিলে সিদ্ধান্ত হবে। আমার আপত্তিটা হল, উনি বলেছেন, কোনো ধর্ষণ মামলা ৭২ ঘণ্টা পরে নেওয়া যাবে না।”
এই আপত্তির ক্ষেত্রে যুক্তি দেখিয়ে আনিসুল হক বলেন, “ফৌজদারি মামলার নীতি হচ্ছে, এটাকে সময় দ্বারা বাধিত করা যাবে না। সেটা হলে ২১ বছর পরে জাতির পিতার হত্যার বিচার করা যেত না।”