৩ কলেজছাত্রী নিখোঁজ: এক আসামির রিমান্ড, তিনজন কারাগারে

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থেকে তিন কলেজ ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার চার জনের মধ্যে রকিবুল্লাহকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2021, 01:47 PM
Updated : 12 Oct 2021, 02:17 PM

তাদের চারজনকে রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা বেগমের আদালতে হাজির পল্লবী থানার মানবপাচার আইনের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়।

শুনানি শেষে বিচারক একজনের রিমান্ড মঞ্জুর করে বাকিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জাফর আহমেদ জানান।

কারাগারে যাওয়া তিনজন হলেন- তরিকুল্লাহ (১৯), জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ (১৮) ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়ন (১৮)।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হযরত আলী ও ইব্রাহিম খলিলসহ কয়েকজন আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ড চান।

তারা বলেন, আসামিরা ‘টিকটক’ জিনিয়ার মাধ্যমে ‘নাবালিকা কিশোরীদের ফুঁসলিয়ে অপহরণ’ করে নিয়ে যায়। কাজ শেষে সেখানেই ফেলে রেখে আসে।’ এই তিন কলেজ শিক্ষার্থীকে ফুঁসলিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার, সার্টিফিকেট নিয়ে গেছে, ৭২ ঘণ্টা পার হলেও তারা উদ্ধার হয়নি। অতি দ্রুত এদের উদ্ধার করা প্রয়োজন। এজন্য তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

তরিকুল্লাহ, জিনিয়া, অয়নের পক্ষে মির্জা সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সোহেল হাওলাদার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

তারা বলেন, এদের তিনজনের বয়সই ১৮ বছরের কম। এ অবস্থায় তাদের রিমান্ড নামঞ্জুর করে বয়স নির্ধারণ করা দরকার।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রকিবুল্লাহর দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। বাকি তিন আসামির বয়স নির্ধারণের পর রিমান্ড শুনানি হবে বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইব্রাহীম খলিল জানান।

শনিবার (২ অক্টোবর) রাতে নিখোঁজ শিক্ষার্থী দিলখুশ জান্নাত নিশার বড় বোন অ্যাডভোকেট কাজী রওশন দিল আফরোজ বাদী হয়ে পল্লবী থানায় মামলাটি করেন। গ্রেপ্তার ওই চারজন ছাড়া অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, নিখোঁজ কাজী দিলখুশ জান্নাত নিশা (১৬) পল্লবী থানার সেকশন-১১, ব্লক-সি, ১৮ নম্বর রোডের মায়ের সঙ্গে বসবাস করতো। সে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। লেখাপড়ার সুবাদে এক নম্বর আসামি তরিকুল্লাহ, রাকিকুল্লাহ, জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ ও শরিফুদ্দিন আহম্মেদ অয়ন, নেহা আক্তার (১৭) ও কানিজ ফাতেমার (১৮) সঙ্গে পরিচয় হয়।

জিনিয়া প্রায় দিলখুশের বাসায় আসা-যাওয়া করতো। তরিকুল্লাহ ও জিনিয়া বাসায় এসে নিশাকে ঘোরাফেরার জন্য বাইরে নিয়ে যেত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালের দিকে দিলখুশ বাসা থেকে বের হয়।

এজাহারে বলা হয়, নিখোঁজের পর তার পরিবারের সদস্যরা খোঁজ করে দেখতে পান, আলমারির ভেতরে রাখা নগদ ছয় লাখ টাকা, স্বর্ণের গয়না, স্কুল সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধনপত্র নেই। তার বান্ধবী নেহা আক্তারের বাবা জানান, বাসা থেকে তার মেয়ে নগদ ৭৫ হাজার টাকা, সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধনপত্র নিয়ে গেছে। এছাড়া কানিজ ফাতেমার বাবা জানান, বাসা থেকে তার মেয়েও আড়াই ভরি স্বর্ণের গয়না, স্কুল সার্টিফিকেট ও জন্ম নিবন্ধনপত্র নিয়ে গেছে।

পরিবারের দাবি, তাদের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের জন্য বাসা থেকে টাকা ও গয়না নিয়ে বের হতে বলেছে একটি চক্র। ফলে তিন ছাত্রীকে পাচারের শঙ্কার কথা জানিয়েছেন ।