হেলেনা জাহাঙ্গীরকে এখনও হেফাজতে না নিলেও মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর তার বাড়িতে সিআইডি অভিযান চালিয়েছে।
শনিবার বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত হেলেনার বাসায় অভিযান চলে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আাজাদ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেখানে কী পাওয়া গেছে, সে ব্যাপারে পরে জানানো হবে।”
চাকরি লীগ নামে ‘ভুইফোঁড়’ সংগঠন করে আওয়ামী লীগের পদ হারানো হেলেনাকে গত ২৯ জুলাই তার গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দুটি ও পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়।
বোট ক্লাবে ধর্ষণচেষ্টার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে আলোচনায় আসা পরীমনিকেও গত ৪ অগাস্ট র্যাব গ্রেপ্তার করে। সেদিন চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এর মাঝে গ্রেপ্তার করা হয় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মরিয়ম মৌসহ আরও কয়েকজনকে। তাদের সবার বিরুদ্ধে মাদকের মামলা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে করা সাতটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা মোট সাতটি মামলায় ছয়জনকে আসামি হিসাবে পেয়েছি। এরই এরই মধ্যে চারজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
ফারুক বলেন, “হেলেনা জাহাঙ্গীর ও মিশু ছাড়া অন্যরা এখন সিআইডি হেফাজতে রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
হেলেনা ও মিশুকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হবে বলে জানান এই সিআইডি কর্মকর্তা।
পরীমনি, পিয়াসা, মৌ, রাজ, শরিফুল হাসান মিশুর বিরুদ্ধে একটি করে মামলা এবং হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার তদন্তভার এখন সিআইডির কাছে।
পরীমনির সঙ্গে সময় কাটানোর ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর অতিরিক্ত উপ কমিশনারকে সাকলায়েনকে শনিবার গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়।
‘প্রয়োজনে’ পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনকেও জিজ্ঞসাবাদ করা হবে বলে জানান সিআইডির কর্মকর্তা ফারুক।
তিনি বলেন, “প্রতিটি মামলা অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে তদন্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট যার নাম আসবে, প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে।”
র্যাবের হাতে হেলেনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলাগুলো তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এরপর পিয়াসা ও মৌকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তের দায়িত্বও নিয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ।
এরপর র্যাব আবার মাঠে নামে। তারা গত ৩ অগাস্ট বসুন্ধরা থেকে শরিফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান ও মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে গ্রেপ্তার করে। পরদিনই গ্রেপ্তার করে পরীমনি, রাজসহ চারজনকে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তভারও নিয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ।
কিন্তু গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা সাকলায়েনের সঙ্গে পরীমনির খবর প্রকাশের পর শুক্রবার আকস্মিকভাবে সবগুলো মামলার ভার গোয়েন্দা পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে নেয় পুলিশ সদর দপ্তর।
সিআইডি কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে এখন তারা মামলাগুলোর তদন্ত করছেন।