শুক্রবার রাত ১১টা ১৩ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে টিকার এই চালান ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আনন্দের সঙ্গে বলছি, আমরা ১৩ লাখ টিকা গ্রহণ করলাম। আরও ১২ লাখ ডোজ টিকা (শনিবার) সকালে এসে পৌঁছাবে। সব মিলিয়ে ২৫ লাখ ডোজ মডার্নার টিকা আমরা পেতে যাচ্ছি।”
টিকার সঙ্কটে দেশে গণ টিকাদান কর্মসূচিতে ছন্দপতনের কথা তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, এসব টিকা আসায় সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচি আবার গতি পাবে। ডিসেম্বর নাগাদ বিভিন্ন উৎস থেকে ১০ কোটি ডোজ টিকা আসবে, যা দিয়ে আরও ৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে।
তিনি জানান, আগামী বছরের প্রথম তিন মাস বা তার পরে জনজন অ্যান্ড জনসন থেকে আরও সাত কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।
করোনাভাইরাসের টিকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। এই দুঃসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যটা (টিকা পাঠানো) খুবই দরকার ছিল।
“এই করোনাভাইরাসের সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের দেশেও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাড়ে নয় লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে, ১৪ হাজারের বেশি মারা গেছে। কোভিড টিকার মাধ্যমে আমরা মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে পারব।”
মডার্নার তৈরি টিকা ইতোমধ্যে জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
এ টিকা ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সের মানুষকে দেওয়া যায়। প্রত্যেককে এই টিকা দুই ডোজ করে দিতে হয়। প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৮ দিন পর দিতে হবে দ্বিতীয় ডোজ।
মডার্নার টিকা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স এর আগে ফাইজারের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা দিয়েছে বাংলাদেশকে, যা ৩১ মে দেশে পৌঁছায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হলো কোভ্যাক্স, যা বিশ্বের সব মানুষের সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক পাওয়া নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সেখানে ছিলেন।
আরও পড়ুন