নারী পাচার: ‘বস রাফি’র স্বীকারোক্তি

ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশের পর গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল রাফি পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2021, 03:11 PM
Updated : 11 June 2021, 12:44 PM

ভারতে নারী পাচারকারী চক্রের ‘হোতা’ হিসেবে গ্রেপ্তার আশরাফ (৩০) ‘বস রাফি’ নামে পরিচিত ছিলেন। এই নামেই তিনি চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে বিভিন্ন তরুণীকে প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বেঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি তরুণীর উপর নির্যাতনের ভিডিও সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে তার তদন্তে নেমে নারী পাচারের একটি চক্রের সন্ধান পায় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ওই চক্রের কাছ থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণী ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মামলা করলে সেই মামলায় আশরাফসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে  র‌্যাব।

মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি আইনের সেই মামলায় আশরাফসহ চারজনকে গত ২ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের হেফাজতে পাঠায় আদালত।

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার মানবপাচার চক্রের চার সদস্য।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার আশরাফকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক।

এরপর ঢাকার মহাগর হাকিম মোহাম্মদ জসীম আসামি আশরাফের জবানবন্দি নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আশরাফ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নাদপাড়া গ্রামের আয়েন উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে।

গত সপ্তাহে আশরাফকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব বলেছিল, প্রায় ৫০ জনের সংঘবদ্ধ একটি চক্রের ‘হোতা’ আশরাফ। আট বছর বেঙ্গালুরুতে থাকার সময় মানবপাচারের একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত হন তিনি এবং দেশে নিজেই একটি চক্র গড়ে তোলেন।

বাংলার পাশাপাশি তামিল ভাষাতেও পারদর্শী রাফি বেঙ্গালুরুতে গাড়ি চালাতেন ও চাকরি করতেন। সেখানে কাপড়ের ব্যবসাও ছিল তার।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নাদপাড়া গ্রামে আশরাফুল মণ্ডলের বাড়ি।

 

র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, বিদেশে বিভিন্ন মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারসহ বিভিন্ন ধরনের ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মূলত যৌনবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পাচার করা হত তরুণীদের।

আশরাফের সঙ্গে রিমান্ডে থাকা আব্দুর রহমান শেখ আরমানও আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার আসামি আরমানের জবানবন্দি নিয়ে তাকেও কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

আশরাফ ও আরমানের সঙ্গে গ্রেপ্তার ইসমাইল সরদার ও সাহিদা বেগমকে রিমান্ড শেষে সরাসরি কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলাটিতে মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এই চক্রের সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান, মহিউদ্দিন ও আবদুল কাদেরকে গত ৩ জুন পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পাঠায় আদালত।

আমিরুল ইসলাম ও আবদুস সালাম মোল্লা নামে আরও দুজনকেও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।

তবে আমিরুল আদালতে দাবি করেন, তিনি এসবের কিছুই জানেন না।