স্পিডবোট মালিক চান্দু ‘অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে’ বলেছিলেন: র‌্যাব

মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনায় পড়া স্পিডবোটের অন্যতম মালিক চান্দু মোল্লা ওরফে চান মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব বলছে, ‘বেশি লাভের আশায়’ তিনি চালককে অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে বলেছিলেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2021, 03:49 PM
Updated : 9 May 2021, 03:49 PM

লকডাউনের মধ্যে এক সপ্তাহ আগে নিষেধাজ্ঞা না মেনে যাত্রী পরিবহনের সময় পদ্মায় দুর্ঘটনায় পড়ে ওই স্পিডবোট, তাতে ২৬ জনের প্রাণ যায়।

ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রোববার প্রথম প্রহরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের এক বাসা থেকে চান্দু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “চান্দু মোল্লা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, অতিরিক্ত মুনাফার আশায় সে স্পিডবোটের চালককে বাড়তি যাত্রী বহন করতে বলেছিল।

“লকডাউনের সুযোগে শুধু অতিরিক্ত যাত্রী বহন নয়, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ আদায় করছিল তারা।”

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে এমনিতে স্পিডবোটে যাত্রী প্রতি ভাড়া দেড়শ টাকা। লকডাউনে যাত্রীদের ‘অসহায়ত্বের সুযোগে’ দুইশ থেকে তিনশ টাকা আদায় করা হচ্ছিল। ধারণ ক্ষমতা ২০ জনের হলেও ওই স্পিডবোটে তোলা হয়েছিল ৩২জন। যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেটও ছিল না।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের জারি করা লকডাউনের মধ্যে নৌ চলাচলও বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু তা না মেনে গত ৩ মে একটি স্পিডবোট শিমুলিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে কাঁঠালবাড়ী (পুরাতন ফেরিঘাট) ঘাটের কাছে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে।

শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে নোঙর করে রাখা বালুবোঝাই বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে স্পিডবোটটি ডুবে যায়। পরে ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় নৌ-পুলিশের এসআই লোকমান হোসেন বাদী হয়ে শিবচর থানায় স্পিডবোটের চালক শাহ আলম, মালিক চান্দু মিয়া, রেজাউল এবং ঘাটের ইজারাদার শাহ আলম খানসহ অজ্ঞাতপরিচয় একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পরে ডোপ টেস্ট করে জানা যায়, স্পিডবোট চালক মো. শাহ আলম (৩৬) ইয়াবা ও গাঁজায় আসক্ত ছিলেন। সে কারণেই সেদিন ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির ধারণা।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেদিন দুর্ঘটনার পর স্পিডবোট মালিক চান্দু আত্মগোপনে চলে যান। পরে র‌্যাব জানতে পারে, কেরানীগঞ্জে এক আত্মীয়র বাসায় তিনি লুকিয়ে আছেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুর্ঘটনায় পড়া ওই স্পিডবোটের কোনো লাইসেন্সও নেই জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, এরকম তিনটি নৌযান আছে চান্দুর। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি এ ব্যবসায় জড়িত।

“ওই স্পিডবোটে জহিরুল হক নামে আরেকজনের অল্প শেয়ার আছে। মামলায় তার নাম নেই। আমরা জেনেছি মালিক হিসাবে মামলায় রেজাউল নামে আরেকজনকে আসামি করা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে তদন্তের পর নাম পরিবর্তন হতে পারে।”

মামলার আসামিদের মধ্যে আহত স্পিডবোট চালক মো. শাহ আলম ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। র‌্যাব বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মলনে জানানো হয়।

পুরনো খবর