গোল্ডেন মনির: রাজউক-গণপূর্ত ও ডিএনসিসির ৭ জনকে দুদকে তলব

বিপুল অর্থ, অস্ত্র-মদ ও সোনাসহ গ্রেপ্তার মনির হোসেনের (গোল্ডেন মনির) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে রাজউক ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দুই কাউন্সিলরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2020, 05:10 PM
Updated : 1 Dec 2020, 05:10 PM

মঙ্গলবার দুদক উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম স্বাক্ষরিত আলাদা নোটিসে ৮ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদেরকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে বলে কমিশনের মুখপাত্র প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

ওই সাতজনের মধ্যে তিনজনকে আগামী ৮ ডিসেম্বর তলব করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজউকের সিবিএ নেতা আবদুল জলিলকে ওই দিন সকাল ১০টায়, রাজউকের নিম্নমান সহকারী ও সিবিএ’র সাবেক নেতা মো. ওবায়দুল্লাহ হককে সকাল সাড়ে ১১টায় এবং রাজউকের উচ্চমান সহকারী ও রাজউক শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মালেককে দুপুর ২টায় তলব করা হয়েছে।

অন্যদিকে রাজউকের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলামকে ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসুকে একই দিন সকাল সাড়ে ১১টায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে।

এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ওরফে সোনা শফিককে ১০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় এবং ডিএনসিসির সাবেক কমিশনার বিএনপি নেতা এমএ কাউয়ুমকে একই দিনে সকাল সাড়ে ১১টায় তলব করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৬ নভেম্বর গোল্ডেন মনির ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে দুদক।

দুদক পরিচালক আকতার হোসেন আজাদের স্বাক্ষরে পাঠানো নোটিসে তাদের ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এই অনুসন্ধান ছাড়াও আট বছর আগে মনিরের অবৈধভাবে অর্জিত এক কোটি ৬১ লাখ টাকার সম্পদ মা ও স্ত্রীর নামে দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলাও করেছে দুদক। এই মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।

মেরুল বাড্ডায় মনিরের ছয়তলা বাড়িতে গত ২০ নভেম্বর রাতে অভিযান চালায় র‌্যাব। অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে এই অভিযান চালানোর পর মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে মনিরের বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি নয় লাখ টাকা, চার লিটার মদ, আট কেজি সোনা, একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।

র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যবসা নয়, কার্যত ‘সোনা চোরাচালানই’ ছিল মনিরের ব্যবসা; পরে তিনি জড়িত হন জমির ব্যবসায়।

এক সময় নিউ মার্কেট এলাকায় মনিরের একটি সোনার দোকান ছিল। ‘স্বর্ণ চোরাচালান’ ব্যবসার সময় তিনি ‘গোল্ডেন মনির’ নামে পরিচিতি পান। তবে ২০০১ সালের পর এই ব্যবসা গুটিয়ে জমির ব্যবসায় মন দেন।

মনিরের বাড়িতে পাঁচটি গাড়ি পাওয়া গেছে, যার মধ্যে তিনটি গাড়ির বৈধ কাগজপত্র নেই বলে সেগুলো জব্দ করেছে র‌্যাব।

তার এক হাজার ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে র‌্যাব। বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা ও নিকুঞ্জে দুইশর বেশি প্লট রয়েছে তার।

র‌্যাবের ভাষ্য মতে, মনিরের বিরুদ্ধে রাজউকের সিল নকল করে ভূমিদস্যুতার একটি এবং দুদকের একটা মামলা রয়েছে।