সিপিপিকে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত করার প্রস্তাব

ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের মৃত্যু কমিয়ে আনায় অবদানের জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিকে (সিপিপি) ২০২১ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারে মনোনয়নের প্রস্তাব করেছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2020, 10:41 AM
Updated : 25 Nov 2020, 10:41 AM

বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়, সিপিপি ১৯৭২ সাল থেকে মানুষের সেবা করে আসছে। তাদের অবদানে ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের মৃত্যু ১০ লাখ থেকে এক অংকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এই অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ২০২১ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারে মনোনয়নের জন্য প্রস্তাব করে কমিটি।

সিপিপি বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি যৌথ কর্মসূচি। ১৯৭০ সালের নভেম্বর মাসের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুরোধে তৎকালীন লীগ অব রেডক্রস বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ বাংলাদেশের উপকূলীয় জনসাধারণের জান-মাল রক্ষায়  ১৯৭২ সালে সিপিপি প্রতিষ্ঠা করে। 

এক বছর না যেতেই লীগ অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। উপকূলীয় জনসাধারণ এবং কর্মসূচির গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার কর্মসূচিটি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তখনকার প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্মসূচিটির অনুমোদন দেন। তখন থেকে এটি বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি যৌথ কর্মসূচি হিসেবে চলছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, অসামান্য আত্মত্যাগ ও অসাধারণ অবদানের জন্য যারা চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন এবং শিক্ষা-সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও জনকল্যাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন- তাদের যথাযথ সম্মান ও স্বীকৃতি প্রদানের দায়িত্ববোধ থেকে দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ দেওয়া হয়।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। পুরস্কারজয়ী প্রত্যেকে পান ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, পাঁচ লাখ টাকার চেক ও একটি সম্মাননাপত্র।

স্বাধীনতা পদকের জন্য প্রস্তাব চেয়ে প্রতি বছর মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং আগে পদক প্রাপ্তদের কাছে চিঠি পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেখান থেকে যাচাই করে পদক দেওয়া হয়।

এদিকে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে বন্যাপ্রবণ এবং নদীভাঙ্গন এলাকার কাজ করার সুপারিশ করে কমিটি এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ক চিঠি পাঠাতে বলা হয়।

বৈঠকে সামাজিক দুর্যোগ অর্থাৎ মাদকাসক্ত, নেশাগ্রস্ত, মাদক ব্যবসায়ী, সামাজিক অবক্ষয়, ইভটিজিং ইত্যাদি মোকাবেলায় নেওয়া কর্মসূচিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলামের বৈঠকে কমিটির সদস্য দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান, মো. আফতাব উদ্দিন সরকার, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এবং জুয়েল আরেং অংশ নেন।