স্মার্টফোন কেনার সামর্থ্য নেই, এমন শিক্ষার্থীদের তালিকা হচ্ছে

ভার্চুয়াল ক্লাসে অংশ নিতে যেসব শিক্ষার্থীর ডিভাইস কেনার সক্ষমতা নেই, তাদের তালিকা পাঠাতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যদের চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2020, 10:07 AM
Updated : 9 August 2020, 10:07 AM

আগামী ২৫ অগাস্টের মধ্যে director_publicuniv@ugc.gov.bd এই ঠিকানায় শিক্ষার্থীদের ‘নির্ভুল তালিকা’ পাঠাতে বলা হয়েছে বলে রোববার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য গত ২৫ জুন উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে ইউজিসি।

“উপাচার্যদের মতামতের ভিত্তিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যাতে সকল শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারে, সে লক্ষ্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধাসহ শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডেটা সরবরাহ এবং সফট লোনের আওতায় স্মার্টফোন সুবিধার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য কমিশন থেকে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের ক্লাস সংসদ টিভিতে প্রচার করা হচ্ছে।

বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মত করে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করলেও সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও ভার্চুয়ালি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাস শুরু করেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অনেকে তাল মেলাতে পারছেন না প্রয়োজনীয় ডিভাইস ও উপযুক্ত ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে।

বিশেষ যেসব শিক্ষার্থী ছুটির মধ্যে গ্রামে অবস্থান করছেন, সেখানে ইন্টারনেটের গতি তাদের ভোগাচ্ছে, তেমনি মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ তাদের জন্য হচ্ছে বাড়তি চাপ।

গ্রামে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের এক ঘণ্টার একটি ক্লাস করতে মোটামুটি ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাবাইট ডেটা খরচ হয়। দাম নির্ভর করে কে কোন অপারেটরের কোন ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করছেন তার ওপর। 

আবার অনেকে তাদের বাসায় ফোরজি নেটওয়ার্ক পান না বলে ভিডিও কলে ক্লাসে যোগ দিতে তাদের ভালো নেটওয়ার্ক আছে এমন কোথাও যেতে হয়। আর যাদের স্মার্ট ফোন বা ল্যাপটপ নেই, তাদের ক্লাসে যোগ দেওয়ারও সুযোগ হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে অন্য চাকরি বা ব্যবসা নয়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অন্য চাকরি বা ব্যবসায় জড়ানো এবং গবেষণার অর্থ অন্য খাতে ব্যয়ের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছে ইউজিসি।

সেখানে বলা হয়েছে, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক স্বীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি বিধি/প্রবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ ও প্রতিপালন করা অবশ্য কর্তব্য।

“চাকরি বিধি/প্রবিধি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী যথাযথ কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে অন্য কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিগতভাবে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা বা কোনো ধরনের লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারেন না।”

কিন্তু কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে কেউ কেউ চাকরিবিধি/প্রবিধি অমান্য করে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেন, কেউ কেউ আবার ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এ বিষয়টি কমিশনের ‘গোচরিভূত হয়েছে’ বলে জানানো হয় চিঠিতে।

এ ধরনের কাজ যে চাকরি বিধিমালার ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’, তা মনে করিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিবিধি/প্রবিধি যথাযথ প্রয়োগ, অনুসরণ ও প্রতিপালন নিশ্চিত করতে উপাচার্যদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে ইউজিসির চিঠিতে।

আরেক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থ যাতে অন্য খাতে ব্যয় করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে উপাচার্যদের অনুরোধ করেছে ইউজিসি।

কমিশন বলছে, গবেষণা খাতের অর্থ গবেষণা কার্যক্রমে ব্যয় করার নিয়ম থাকলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়মের ব্যত্যয় হচ্ছে।