মানবজমিনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে যা বললেন তথ্যমন্ত্রী

যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন কারবারে ‘জড়িতদের’ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় মানবজমিনের প্রধান সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের মামলা নিয়ে কথা বলেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2020, 05:53 PM
Updated : 11 March 2020, 06:56 PM

এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ‘কিছু কাল্পনিক’ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সম্পাদক বলেছেন, “আমি মনে করি, সত্যতা যাচাই না করে এ ধরনের কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ কোনো ভাবেই সমীচীন নয়। যদি কেউ করে থাকে, সেটি পত্রিকা হোক, অনলাইনে হোক বা অন্যভাবে হোক সেটার দায় তারা এড়াতে পারেন না।”

যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলার সাধারণ সম্পাদক (পরে বহিষ্কৃত) পাপিয়াকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারের পর তার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক ‘যৌনসেবার কারবার’র কথা জানায় র‌্যাব। পাঁচতারকা ওই হোটেলের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট মাসের পর মাস ভাড়া করে পাপিয়া কারবার চালাতেন বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

সেখানে যাতায়াতকারী হিসেবে কয়েকজন আমলা, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কর্মকর্তা, টক শোর আলোচক, সংসদ সদস্য, রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীর কথা উল্লেখ করা হয়েছিল গত ২ মার্চ প্রকাশিত মানবজমিনের প্রতিবেদনে।

ওই প্রতিবেদনে কারও নাম উল্লেখ করা না হলেও সোশাল মিডিয়ায় সেই সংবাদ ছড়ানোর পাশাপাশি নামের তালিকাও উঠে আসছে। সেখানে নিজের নামও দেখার কথা জানিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানবজমিনের সম্পাদক ও প্রতিবেদকসহ ফেইসবুক পোস্টদাতা ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন শিখর।

সম্পাদক পরিষদ এই মামলার নিন্দা জানিয়ে বুধবার বিবৃতি দিয়েছে।

এদিন ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে এই মামলা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

জবাবে তিনি বলেন, “কেউ সংক্ষুব্ধ হলে দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেই পারেন। সেটি তার সাংবিধানিক অধিকার। যাচাই-বাছাই না করে দায়িত্বশীল পত্রিকা কিংবা কোনো দায়িত্বশীল অনলাইন, কিংবা দায়িত্বশীল কোনো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ করা কোনোভাবেই দায়িত্বশীলতার মধ্যে পড়ে না।

“সুতরাং এই দায়িত্বহীন আচরণ যদি কেউ করে থাকেন, দায়িত্বহীনতার দায় তাকে নিতে হবে।”

মির্জা ফখরুলকে ‘পড়াশোনার’ পরামর্শ

নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে বিএনপি নেতারা ‘জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে শুধু সরকারের ভুল খোঁজার’ রাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।

বিএনপি মহাসচিবকে নিয়ে তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব এ ব্যাপারে একটু পড়াশোনা করার জন্য। কারণ করোনাভাইরাসে আক্রান্তকে সাথে সাথে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। সংক্রমিত হওয়ার ১৫ দিন পরে তার দেহে করোনাভাইরাস আছে কি না সেটি নির্ণয় সম্ভব হয়।

“সুতরাং বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দরে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও বিদেশ থেকে আসা বাঙালিরা স্ক্রীনিংয়ে মধ্য দিয়ে দেশে প্রবেশ করলেও সাথে সাথে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তাদের দেহে সেটি পাওয়া গেছে, যেটি অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে ঘটেছে।”

যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, ইতালিসহ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার কথা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা কারিগরি ও মেডিকেল সায়েন্সের দিক দিয়ে অনেক বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ, অর্থনৈতিক সক্ষমতাও আমাদের চেয়ে অনেক বেশি, সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেদের করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে পারেনি।

“আমাদের দেশে সরকার সময়োচিত সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার কারণে ১০০টি দেশ আক্রান্ত হওয়ার পর আমাদের দেশ আক্রান্ত হয়েছে। মাত্র তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।”

এই বৈশ্বিক দুর্যোগের সময় রাজনৈতিক বাদানুবাদ না করে সংকট মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেতা হাছান।

তিনি বলেন, “আমরা স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, যেন আমাদের দেশে এই দুর্যোগ কোনোভাবেই আর না ছড়ায়। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্দেশনা দিয়েছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও জনগণের পাশে থাকবে।”