মঙ্গলবার আইইডিসিআরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ আহ্বান জানান।
নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে সঠিক তথ্য প্রচারে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “গুজব যাতে ছড়িয়ে পড়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে বা ভুল পদক্ষেপ যেন না হয়, আমরা সেদিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
“সব পর্যায়ে সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য সঠিক তথ্যটা পৌঁছে দিলে কিন্তু গুজব এমনিতেই চলে যায়। আমরা যেন অথেন্টিক সোর্সের তথ্যগুলোই পরিবেশন করি, চর্চা করি।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, “আপনাদের মাধ্যমে সঠিত তথ্যটা যেন সবার কাছে পৌঁছে যায়, সেজন্য প্রতিদিন আমরা প্রেস ব্রিফিং করে যাচ্ছি।
“আমাদের কাছে এমন কোনো বিশেষ তথ্য নাই, যেটা প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে না বললে মানুষ জানবে না। কিন্তু তারপরও আমরা প্রেস ব্রিফিং করছি, কারণ আমরা আপনাদের সহযোগী হিসেবে চাই যেন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক গুজব ছড়িয়ে না পড়ে, মানুষ সঠিক তথ্যটা যেন পায়।”
করোনাভাইরাস নিয়ে যে কোনো ধরনের তথ্যের জন্য আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন তিনি।
করোনাভাইরাস বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ফেব্রুয়ারির শুরুতে চারটি হটলাইন চালু করে আইইডিসিআর। এ নম্বরগুলো হচ্ছে- ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪ এবং ০১৯২৭৭১১৭৮৫।
দেশে এখন পর্যন্ত ৭৪ জনের নমুনার পিসিআর পরীক্ষা করা হলেও কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি বলে জানান অধ্যাপক ফ্লোরা।
বাংলাদেশে পিসিআর পরীক্ষার সুযোগ আছে কেবল আইইডিসিআরে। সে কারণে কারও মধ্যে সংক্রমণের সন্দেহ দেখা গেলে আইইডিসিআরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, “আমরা যারা চীনের বাইরে আছি, তাদের অতটা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা বার বার বলেছি, যেহেতু ঝুঁকি রয়েছে, তাই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
“দেশের বাইরে থেকে সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়ে কেউ এলে তাদের আমরা শনাক্ত করে আলাদা করে রাখছি, যেন কোনোভাবেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে।”
সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচজন বাংলাদেশির একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে তিনি বলেন, “সিঙ্গাপুরে আক্রান্ত ৮১ জন রোগীর মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক; তারা আইসিইউতে আছে। এদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি রয়েছে। আমরা সকলের কাছে দোয়া চাইছি, ইনি যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
“উনি আগে থেকেই হাঁপানি রোগী ছিলেন। প্রথম বাংলাদেশি রোগী হিসেবে তিনি শনাক্ত হয়েছিলেন। উনি চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন ওখানে।”
দেশে পশুপাখি থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কা এখনও নেই জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, “বাংলাদেশে কোনো পশুপাখির মধ্যে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেই। তবে অসুস্থ বা যে কোনো ইনফেক্টেড প্রাণী থেকে দূরে থাকার জন্য বলছি আমরা। ”