ঋণ নিয়ে পলাতকদের শান্তিতে ঘুমাতে দেব না: ইকবাল মাহমুদ

জালিয়াতি করে যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পালিয়েছেন, তাদেরকে শান্তিতে ঘুমাতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2020, 03:43 PM
Updated : 16 Feb 2020, 03:43 PM

রোববার রাজধানীর শান্তিনগরে বিসিএস কর একাডেমি মিলনায়তনে কমিশনের কর্মকর্তাদের ‘আয়কর আইন ও বিধানাবলী’ সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার এই হুঁশিয়ারি আসে।

তিনি বলেন, “আজ যারা ব্যাংক থেকে জাল-জালিয়াতি করে অবৈধভাবে ঋণ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। কর ফাঁকি দিয়ে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করছেন। আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদেরকে তাড়া করছি। শান্তিতে তাদেরকে ঘুমাতে দেব না।”

শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে যারা পালিয়ে গেছেন, তাদের ছেলে-মেয়েরা রাজধানীতে গভীর রাতে কীভাবে গাড়ি চালায়- এমন প্রশ্ন রেখে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “তাদের অনেকের আয়কর রিটার্নই নেই। এটা কীভাবে সম্ভব?  আমরা এটা বন্ধ করতে চাই। এটা চলতে পারে না।”

১৬ কোটি মানুষের দেশে ২০ লাখ মানুষ আয়কর রিটার্ন জমা দেন, আর আয়কর দেন মাত্র ১২ লাখ মানুষ- এই পরিসংখ্যানকে অত্যন্ত ‘লজ্জার’ বলে মন্তব্য করেন ইকবাল মাহমুদ।

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, তাদের ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তাতে প্রতিটি নাগরিক নিজেকে দেশের মালিক ভাবতে পারবেন। আর ট্যাক্স রিটার্ন থাকলেই আয়কর দিতে হবে বিষয়টি কিন্তু তেমন নয়। যার করযোগ্য আয় নেই, তাকে কোনো আয়কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।”

সকলে আয়কর রিটার্ন জমা দিলে অবৈধ সম্পদ অর্জনের পথ সঙ্কুচিত হবে এবং অবৈধ সম্পদ ভোগ করার প্রবণতা কমে আসবে বলেও মনে করেন দুদক চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধভাবে অনেক বিদেশি কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের অনেকেই আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন এবং অবৈধভাবে এই অর্থ পাচার করছেন বলে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আয়কর বিভাগ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা সমন্বিতভাবে এদেরকে চিহ্নিত করে আয়কর আদায় করতে পারে। যারা এভাবে আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে।”

কোনো মানুষ কারও পকেটে জোর করে ঘুষ দেয় না, ঘুষখোরেরা ঘুষ চেয়ে নিয়ে থাকে মন্তব্য করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “একজন শিক্ষিত কর্মক্ষম মানুষ কীভাবে হাত পেতে ঘুষ চায়! তাই ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি ক্ষমতার প্রয়োগ অব্যাহত রাখা হবে।”

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন) আরিফা শাহানার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে এনবিআরের সদস্য (কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন, দুদকের মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও আইসিটি) এ কে এম সোহেল, বিসিএস কর একাডেমির মহাপরিচালক লুৎফুল আজিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।