সম্রাট-আরমানের মাদক মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের সাবেক সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে করা মাদক মামলার নথিপত্র বিচারের জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2019, 12:51 PM
Updated : 15 Dec 2019, 12:51 PM

এ আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই মাহমুদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় রোববার  মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার মহানগর হাকিম মাসুদ উর রহমান।

এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর এই মামলায় দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় র‌্যাব। রোববার নথি মহানগর হাকিম মাসুদ উর রহমানের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তিনি অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মামলা বিচারের জন্য স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় অভিযোগপত্র দেয় র‌্যাব। ওই মামলাও মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য স্থানান্তরিত হয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে সম্রাটের হেফাজত থেকে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য, বৈদ্যুতিক শকের যন্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা লিখেছেন, সরেজমিনে, প্রকাশ্য ও গোপনে ব্যাপক তদন্ত করে সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রাপ্ত তথ্যাদির আলোকে, আলামতদৃষ্টে, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় আসামি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও এনামুল হক আরমানের হেফাজত থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এই চার্জশিট দাখিল করা হল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের এক সভায় যুবলীগ নেতাদের কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশের পর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। অভিযানে ক্রীড়া ক্লাবগুলো থেকে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম ও জুয়ার টাকা উদ্ধার করা হয়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, মদ ও নগদ টাকা উদ্ধারের পর যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, ওয়ান্ডারার্স, মোহামেডানসহ আরও বেশ কয়েকটি ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার প্রমাণ মেলে।

এসব ক্লাবে অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর পেছনে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সম্পৃক্ততার কথা উঠে আসে। পরে গত ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি গ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী যুবলীগ নেতা আরমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরমান মদ্যপ অবস্থায় থাকায় তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কুমিল্লা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সম্রাটকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় সম্রাটের কার্যালয় রাজধানীর কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অভিযান চালায় র‌্যাব।

ভবনটির চারতলায় সম্রাটের বিশ্রাম কক্ষ থেকে এক হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। এছাড়া সম্রাটের কক্ষে একটি লাগেজ থেকে ১৯ বোতল মদও উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করা হয়।

ওই দিন সন্ধ্যায় র‌্যাব-১-এর ডিএডি আবদুল খালেক বাদী হয়ে রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। পরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগেও আরেকটি মামলা হয় সম্রাটের বিরুদ্ধে।