চীনা নাগরিক খুন: বন্ধ ছিল বাড়ির সিসি ক্যামেরা

ঢাকার বনানীর যে বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গায় মাটিতে পোঁতা অবস্থায় এক চীনা নাগরিকের লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়িতে সিসি ক্যামেরা থাকলেও তা বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2019, 04:22 PM
Updated : 12 Dec 2019, 06:11 AM

ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলছেন, এ ঘটনায় ওই চীনা নাগরিকের গাড়িচালকসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তেমন কোনো তথ্য মেলেনি।

বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বনানীর ২৩ নম্বর রোডের ৮২ নম্বর বাসার পাশ থেকে গাউজিয়ান হুই নামে ৪৭ বছর বয়সী ওই চীনা নাগরিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তার গাড়িচালক সুলতানসহ তিনজনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ জন্য থানায় নিয়ে যায়।

দশ তলা ওই ভবনের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন গাউজিয়ান। ঢাকায় তিনি পাথরের ব্যবসা করতেন এবং পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজেও পাথর সরবরাহ করতেন বলে তথ্য আছে পুলিশের কাছে।

গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হয়েছে। ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলো ছিল বন্ধ। প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে, হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে সিসি ক্যামেরা বন্ধ রেখেছিল।”

পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আব্দুল আহাদ বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাউজিয়ানকে দেখেছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তার কর্মচারীরা।

“সন্ধ্যার পরে কোনো এক সময় তাকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। আজ সকালে বাসার কাজের লোকজন ভবনের পাশের খোলা জায়গায় কাজ করার সময় মাটি থেকে শরীরের অংশ বেরিয়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়।”

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ওই বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এসে দেখি পায়ের গোড়ালি আর মাথার চুল মাটির উপরে বেরিয়ে আছে। তখন আমরা ধারণা করি, কাউকে ওখানে পুঁতে রাখা হয়েছে। তখনই সিআইডি এবং চীনা দূতাবাসে খবর দেওয়া হয়। তারা এলে লাশ তোলা হয়।"

লাশ তোলার সময় গাউজিয়ানের নাকে রক্ত এবং গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।”

ষষ্ঠ তলার যে ফ্ল্যাটে গাউজিয়ান থাকতেন, তার সামনের অংশে ছিল তার অফিস। সেখানে একটি স্যান্ডেলে কয়েক ফোটা রক্ত এবং দরজায় ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়ার কথা জানিয়েছেন উপ-কমিশনার সুদীপ।

সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “হত্যা রহস্যের কোনো ক্লু এখনো মেলেনি। আটক তিনজনের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।”

গত ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশে বসবাস শুরু করার পর থেকে ১৭-১৮ বার চীনে যাতায়াত করেছেন গাউজিয়ান হুই। ঘটনার সময় তার পরিবারের সদস্যরা কেউ ঢাকায় ছিলেন না। বৃহস্পতিবার তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

চীনা এই নাগরিকের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তার ময়নাতদন্ত হবে।