২ দিনে ৩টি কুকুর খুন, ৮টি গুম; থানায় অভিযোগ

দুই দিনে তিনটি কুকুরকে হত্যা আর আটটি কুকুরকে গুম করার অভিযোগ পেয়ে তার তদন্তে নেমেছে ঢাকার খিলক্ষেত থানা পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2019, 03:27 PM
Updated : 7 Nov 2019, 03:43 PM

ওই থানা এলাকার পিংক সিটিতে কয়েকজন পশুপ্রেমী দেশি এই কুকুরগুলো লালন-পালন করতেন।

থানায় একটি কুকুরের মৃত্যু এবং আটটি নিখোঁজ হওয়ার খবর দিলে পুলিশ তদন্তে গিয়ে আরও দুটি কুকুরের মৃত্যুর ঘটনা জানতে পারে।

খিলক্ষেত থানার এসআই সজল সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পিংক সিটির এলাকার পশুপ্রেমী সাদিয়া সালমা থানায় অভিযোগ করে বলেন এই এলাকায় বসবাস করে আসা আটটি কুকুর গত মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ। এছাড়া ওই দিন সকালে একটি কুকুরের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার থানায় করা সালমার অভিযোগে বলা হয়, এই কুকুরগুলোতে কেউ হত্যা বা হত্যার পর গুম করে থাকতে পারে।

“বুধবার অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই দিন আরও দুইটি কুকুর মারা গেছে,” বলেন এসআই সজল।

পিংক সিটিতে বসবারত আরেক পশুপ্রেমী শাহনেওয়াজ কাকলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই কুকুরগুলো সাদিয়া সালমাসহ তারা লালন-পালন করতেন।

চলচ্চিত্র নির্মাতা কাকলীর স্বামী অভিনেতা প্রাণ রায়। গত বছর প্রাণ রায়ের দুটি পোষা কুকুর মেরে ফেলার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল।

কাকলী বলেন, “দুই দিনে তিনটি কুকুরের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রতিটি কুকুরের মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। এই তিনটি কুকুর ছাড়াও আরও আটটি কুকুর নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করছি, এগুলোকে হত্যার পর গুম করা হয়েছে।”

বর্তমানে চারটি কুকুর ওই আবাসিক এলাকায় রয়েছে। তাদের জীবন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন কাকলী।

কারা কেন এই কুকুরগুলোকে মেরেছে, তা এখনও বের করতে পারেনি পুলিশ।

সাদিয়া সালমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এর আগে এই পিংক সিটিতে বড় কুকুরগুলোকে মাথায় রড দিয়ে মেরে হত্যা করা হত। বাচ্চাগুলোকে বাস্তায় ভরে পানিতে ফেলে দেওয়া হত।  গত তিন বছর ধরে তারা একটি সংগঠন গড়ে কুকুরগুলোকে রক্ষা করে আসছেন।

তিনি বলেন, “সম্প্রতি এক ব্যক্তি মোবাইলে আমাকেসহ পশুপ্রেমী কয়েকজনকে কুকুরের বিষয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে বলেছে, এই এলাকায় কোনো কুকুর যেন না থাকে। হুমকির কথা পুলিশকে জানানো হয়েছে।”

তদন্ত কর্মকর্তা সজল বলেন, সাদিয়ার দেওয়া একটি মোবাইল নম্বর ধরে তারা তদন্ত করছেন।

তিনি জানান, মারা যাওয়া একটি কুকুর মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। দুটি উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

পিংক সিটির এই কুকুরগুলো দেশি হলেও এগুলোকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত কাকলী। তিনি পাঁচটি কুকুরের দেখভাল করেন; সেগুলোর নাম হচ্ছে-  ‍টি, কফি, ব্রাউনি, মিল্কি ও বাটার। একটি চলচিত্রে বাটারকে দিয়ে অভিনয়ও করানো হয়েছে।

কাকলী বলেন, “কুকুরগুলো কারও বাড়ির সামনে, রাস্তায় ঘোরাঘুরি করত এবং রাত কাটাত।  তাদের নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়া হত। ভ্যাকসিনও দেওয়া হয়েছে।”

থানায় অভিযোগকারী সাদিয়া চারটি কুকুর দেখভাল করতেন বলে কাকলী জানান।