আগের দিনের মতই বুধবার সকাল থেকে বুয়েটের শহীদ মিনার চত্বরে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। দুপুরে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে এ দাবি জানান সমিতির সভাপতি একেএম মাসুদ।
তিনি বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে শিক্ষক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুয়েটে আগের বিভিন্ন ঘটনায় ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে আজকের এই অবস্থা হয়েছে।
“আমরা উনাকে এসব ঘটনার জন্য দায়ী করছি। উনাকে বুয়েট থেকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা পদত্যাগ দাবি করছি। উনি যদি পদত্যাগ না করেন, সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে উনাকে যেন অপসারণ করা হয়।”
এর আগে সকাল ১০টা ধেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত জরুরি সভায় বসে শিক্ষক সমিতি।
এদিকে আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ব্যর্থতার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ পুরো প্রশাসনের অপসারণ চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন ছাত্রদের সমিতি।
সকালে বুয়েট খেলার মাঠে জরুরি বৈঠক থেকে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের জন্য সাত দফা দাবি জানায় বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
বৈঠকের পর সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানান।
সমিতির ৭ দফা দাবি-
>> অনতিবিলম্বে আবরার ফাহাদ হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিশেষ বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় এনে দ্রুত সময়ে বিচার করতে হবে।
>> হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব ছাত্রকে অনতিবিলম্বে বুয়েট থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে।
>> বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গসংগঠনভিত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে।
>> বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ঐতিহ্যের পরিপন্থী যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও প্রভাবমুক্ত রাখবার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
>> অবিলম্বে উপাচার্যের অপসারণসহ প্রশাসনের আমূল পরিবর্তন করে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মান অতীতের মতো সমুন্নত রাখতে সুযোগ্য নির্ভীক ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের পদায়ন করতে হবে।
>> র্যাগিং এবং অন্যান্য অযুহাতে ছাত্র-ছাত্রী নির্যাতন নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হব।
>> আবরার হত্যাসহ ইতোপূর্বে সংগঠিত অন্যান্য ছাত্র নির্যাতনের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণ বিচারকাজ অবিলম্বে সম্পন্ন করতে হবে, উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার গভীর রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ফেইসবুকে মন্তব্যের সূত্র ধরে শিবির সন্দেহে আবরারকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারাসহ মোট ১৯ জনের নামে চকবাজার থানায় মামলা করেছেন আবরারের বাবা।