কমলাপুরে ট্রেনের বগিতে তরুণীর লাশ

ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের পরিত্যক্ত একটি বগিতে এক তরুণীর লাশ পাওয়া গেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2019, 01:00 PM
Updated : 23 August 2019, 11:13 AM

পঞ্চগড়ের ওই তরুণীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।

নিহতের নাম আসমা আক্তার (১৮)। তিনি পঞ্চগড় জেলার সিনপাড়ায় কৃষিজীবী আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। তিনি বাড়ির কাউকে না বলে ঢাকায় চলে এসেছিলেন বলে তার বাবা জানিয়েছেন।

সোমবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের বলাকা ট্রেনের একটি বগিতে আসমার লাশ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ওমর ফারুক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত (রোববার) রাত ৮টায় এই ট্রেনটি কমলাপুরে আসে। পরে এই ট্রেনের একটি বগি ‘ড্যামেজ’ ঘোষণা করে সকাল বেলা এই ট্রেন এই বগিটি প্লাটফর্মে রেখে চলে যায়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বগিটি বুঝে নেওয়ার সময় বাথরুমে আসমার মৃতদেহ পায়।”

“তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে,” বলেন এই রেল পুলিশ কর্মকর্তা।

ওই তরুণীর সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগের মধ্যে জন্ম সনদ দেখে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।

আসমার বাবা রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আসমা রোববার সকাল ১০টার দিকে বাড়িতে ছোট বোনের সঙ্গে খেলা করার ফাঁকে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে যান।

আসমাকে এলাকায় খোঁজাখুজি করেও পায়নি তার পরিবার। সোমবার দুপুরে ঢাকা থেকে ফোনে মেয়ের মৃত্যুর খবর পান রাজ্জাক।

তিনি বলেন, পাশের গ্রামের মারুফ হাসান বাধন (২০) নামে এক তরুণের সঙ্গে তার মেয়ের ‘সম্পর্ক’ ছিল।

“গতকাল (রোববার) আসমা বাসা থেকে বের হওয়ার পর বাধনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু সে (বাধন) কই আছে, কিছুই ঠিকমতো বলছিল না। পরে সে তার মোবাইল বন্ধ করে দেয়।”

রাজ্জাকের অভিযোগ, বাধনই তার মেয়েকে কৌশলে বাড়ি থেকে বের করে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে।

আসমা এবার পঞ্চগড় খান বাহাদুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৪ পেয়েছে।

রাজ্জাক জানান, তার শ্যালকের পরিবার গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। পরীক্ষার পর মামা বাবলু আসমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে গাজীপুরে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে আসমা ১০ দিন ছিলও। কিন্তু চাকরি হতে দেরি হওয়ায় পঞ্চগড়ে ফিরে যান আসমা।

চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তখনই আসমাকে দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে রাজ্জাক জানান, সেটাই তার ব্যাগে ছিল। আর তা দেখেই পুলিশ ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর পায়।

“এই কাগজ না থাকলে আজ আমি মেয়ের লাশও পেতাম না,” বলেন রাজ্জাক।