মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে সিন্ডিকেট: ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে দশটি রিক্রুটিং এজেন্সির জোট গঠনের ঘটনায় আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2019, 12:31 PM
Updated : 26 June 2019, 12:31 PM

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই আদেশ দেয়।

গত বছরের ২৯ অক্টোবর এই কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পরে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের (কর্মসংস্থান অনুবিভাগ) অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের ওই কমিটি করা হয়।

সেখানে দুদকের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজনকে সদস্য হিসেবে রাখা হলে পরে কমিটি থেকে নিজেদের প্রতিনিধির নাম প্রত্যাহারের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করে দুদক। সেই আবেদন বুধবার খারিজ করে আদালত বুধবার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তারিখ ঠিক করে দিল।

আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আখতার ইমাম, সঙ্গে ছিলেন রাশনা ইমাম।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাজার। সরকারি হিসাবে পাঁচ লাখের বেশি নিবন্ধিত বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় কাজ করেন; যদিও বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।

মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হওয়ার পর ২০১৬ সালে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পাঁচ বছর মেয়াদী এই চুক্তির আওতায় লোক পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয় দশটি জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সিকে।

এজেন্সিগুলো হল- ক্যারিয়ার ওভারসিজ, এইচএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স, সানজারি ইন্টারন্যাশনাল, রাব্বী ইন্টারন্যাশনাল, প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটস, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল, ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেড, আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম ও আল ইসলাম ওভারসিজ।

কিন্তু প্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগসাজশে একটি চক্র ওই দশ এজেন্সিকে নিয়ে সিন্ডিকেট করে শ্রমিকদের কাছ থেকে দুই বছরে অন্তত ২০০ কোটি রিঙ্গিত হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠার পর গতবছর জুনে ওই ব্যবস্থা স্থগিত করে দেশটির সরকার।

সে সময় মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ১০ এজেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে মাথাপিছু সর্বোচ্চ দুই হাজার রিংগিত খরচ হওয়ার কথা। সেখানে এজেন্টরা বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে ২০ হাজার রিংগিত আদায় করছিল।  এর অর্ধেক টাকা যাচ্ছিল সেই সিন্ডিকেটের হাতে, যার বিনিময়ে তারা ওয়ার্ক পারমিট ও উড়োজাহাজের টিকেটের ব্যবস্থা করে দিচ্ছিল।

এরপর গত অক্টোবরে ১০ এজেন্সির সিন্ডিকেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের আদালতে রিট আবেদন করে অন্য ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। ১০টি প্রতিষ্ঠানকে একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি ‘মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন’ বলে অভিযোগ করা হয় ওই রিট আবেদনে।

ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গতবছর ২৯ অক্টোবর হাই কোর্ট একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেয়।