স্কুলছাত্র বাদল হত্যায় ২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

বিশ বছর আগে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার স্কুলছাত্র বাদল হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রেখেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2019, 12:53 PM
Updated : 18 April 2019, 12:53 PM

তবে খালাস পেয়েছেন বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া দুই আসামি।

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ এস এম সোলায়মান জেলার মোরেলঞ্জ উপজেলার বহর বুনিয়া গ্রামের মৃত মতু হাওলাদারের ছেলে ফুল মিয়া হাওলাদার ও একই গ্রামের মফেজ মল্লিকের ছেলে শহিদুল মল্লিককে ফাঁসির রায় দিয়েছিলেন।

যাবজ্জীবন দিয়েছিলেন বহর বুনিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী হাওলাদারের ছেলে মনিরুজ্জামান ওরফে মনিরুল হাওলাদার ও মৃত আবদুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে আলী আকবর হাওলাদারকে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামি মনিরুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ রেজাউল কবির খান। পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বাবুল।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে হাই কোর্টের রায়ে। তবে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছে হাই কোর্ট।”

চার আসামির মধ্যে মনিরুজ্জামান বাদে বাকি তিন আসামিই পলাতক বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।

রেজাউল কবির খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার প্রথম অভিযোগপত্রে আমার মক্কেল মনিরুজ্জামান ও যাবজ্জীবন পাওয়া আলী আকবর হাওলাদারের নাম ছিল না।

পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে নাম যুক্ত করা হলেও কেন তাদের নাম যুক্ত করা হয়েছে তার প্রমাণযোগ্য কোনো কারণ হাই কোর্ট বিচারিক আদালতের রায়ে খুঁজে পায়নি। তাছাড়া এ দুজনের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষিদের একটি কথাও নেই। এসব দিক বিবেচনায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।”

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহর বুনিয়া গ্রামে ১৯৯৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে আসামি ফুল মিয়া হাওলাদারসহ দুই-তিনজন দুর্বৃত্ত প্রতিবেশী এলাল উদ্দিনের বাড়িতে যান।

এ সময় আসামি ফুল মিয়া এলাল উদ্দিনের স্কুলপড়ুয়া ছেলে বাদলের ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়ে বাদলের বাবা এলাল ও তার মাতানজিরা বেগমের ঘুম ভেঙে যায়। এরপর বাদলের ঘরে গিয়ে খাটের ওপর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।

আসামি ফুল মিয়ার সঙ্গে এলাল উদ্দিনের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছ। ঘটনার দিন বিকালে এলাল উদ্দিন বাদি হয়ে ফুল মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মোরেলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

২০০১ সালের ১৯ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ফুল মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় তদন্তকারী কর্মকর্তা।  পরে মামলার বিচার শেষে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করে আদালত।

নিয়ম অনুযায়ী অনুসারে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশের অনুমোদনের আবেদন) হাই কোর্টে আসে। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন পাওয়া মনিরুজ্জামান ফৌজদারি আপিল করেন।

তার ওপর শুনানি শেষ হলে বুধবার রায় দিল হাই কোর্ট।