আমরা রেডি: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

নির্বাচন সামনে রেখে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2018, 11:05 AM
Updated : 6 Nov 2018, 11:06 AM

তবে এবার নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় কতটা পরিবর্তন আসতে পারে সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবার মন্ত্রিসভার আকারে বড় কোনো পরিবর্তন নাও আসতে পারে বলে গতমাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ইংগিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাবও তিনি নাকচ করে আসছিলেন।  

কিন্তু তফসিলের আগে রাজনৈতিক শিবিরে বিরোধপূর্ণ অবস্থানের মধ্যে হঠাৎ করেই তিনি বিরোধী দল ও জোটগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে সম্মত হলে নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে- সে প্রশ্ন আবারও সামনে চলে আসে। 

এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অন্যরা আগের পদেই থাকবেন। 

এদিকে মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, “মন্ত্রিসভা সঙ্কুচিত করা হবে কি না- এখন পর্যন্ত আমি সেটা জানি না, আমাকে অবহিত করা হয়নি, জানলে আপনাদের জানাব।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশের বিষয়টি তাকে ‘অফিসিয়ালি’ জানানো হয়নি।

অফিসিয়াল নির্দেশনা পেলে এবং টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা পদত্যাগ করলে পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে- সেই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “খুব বেশি সময় লাগে না। আমরা সামারি করে পাঠিয়ে দেব, মাহামান্য (রাষ্ট্রপতি) হয়ে চলে আসবে।”

মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের বিষয়ে আরেক প্রশ্নে শফিউল বলেন, “আমরা রেডি এগুলোর ব্যাপারে।”

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা এখন সংবিধানে নেই। বর্তমান ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, তবে তিন মাসের ক্ষণ গণনা শুরু হলে সংসদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অধীনে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেন; যার নাম দেওয়া হয় ‘সর্বদলীয় সরকার’।

ওই মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর নেতাদের নেওয়া হয়। স্বল্প পরিসরের ওই মন্ত্রিসভা সরকারের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে। বিএনপিকে সেই ‘সর্বদলীয়’ সরকারে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তারা প্রত্যাখ্যান করে।

শুরু থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের বিরোধিতা করে আসা বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি তা ঠেকানোর আন্দোলনে নামে। অন্যদিকে নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ আবারও সরকার গঠন করে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছিলেন, ২০১৩ সালের মত এবারও ভোটের আগে ‘ছোট পরিসরের নির্বাচনকালীন’ মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। চলতি বছরের শুরুতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নিজেও তেমনই আভাস দিয়েছিলেন।

কিন্তু গত ২২ অক্টোবর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বর্তমান মন্ত্রিসভায় ‘সব দলের’ প্রতিনিধিই আছেন। আর নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট করা হলে উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ফলে এবার নির্বাচন সামনে রেখে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করছেন না।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, মন্ত্রিসভার আকার যাই হোক, বৈঠক নিয়মিতভাবেই হবে। 

“অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেন বা যাই বলেন, এই সময়ে কিন্তু মন্ত্রিসভার বৈঠক বাধাগ্রস্ত হয় না, এটা চলতে থাকবে, কোনো বাইন্ডিংস নেই।”