সিনহার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অনুসন্ধানে দুদক

সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কেনার একটি অভিযোগের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2018, 08:14 AM
Updated : 1 Oct 2018, 11:02 AM

এজন্য দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানকে প্রধান করে দুই সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচায্য জানিয়েছেন।

কমিটির অপর সদস্য হলেন- উপ-সহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস।

প্রনব কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশি নাগরিক অনন্ত কুমার সিনহা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে দুই লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারে (দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা) চার হাজার বর্গফুটের তিন তলা বাড়ি ক্রয়, বিদেশে অর্থ পাচার ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদকে একটি অভিযোগ এসেছে। তার অনুন্ধানের জন্য এই কমিটি করা হয়েছে।

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এর এক বছরের মাথায় তিনি বিদেশে বসে ‘এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন যা নিয়ে আলোচনা চলছে। ওই বইতে সিনহা দাবি করেন, তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্বাসনে পাঠানো হয়।

শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সিনহা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।

এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে ভাই অনন্ত কুমার সিনহার নামে ওই বাড়ি কেনার খবর গণমাধ্যমে এসেছে।

এবিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের সময় প্রবাসী বাংলাদেশি এক সাংবাদিক এবিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অ্যামেরিকায় বাড়ি কেনা তো খুব একটা কঠিন ব্যাপার না। বরং বাংলাদেশেই এখন কঠিন। বাংলাদেশই দাম বেশি। এখানে তো একটা ডিপোজিট দিলেই বাড়ির মালিক হওয়া যায়। কে কীভাবে কিনলো; সেটা খুঁজে বের করে তথ্য দেন, সেটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগেই বিচারপতি সিনহার ব্যাংক হিসাবে চার কোটি টাকা জমা দেওয়ার একটি অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীমসহ সাতজনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

এ অভিযোগের অনুসন্ধানে গত ৬ মে মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা নামে কথিত দুই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পে-অর্ডারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের এক ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির’ ব্যাংক হিসাবে চার কোটি টাকা জমা দেওয়ার বিষয়টির অনুসন্ধানের জন্য ওই দুজনকে তলবের কারণ দেখিয়েছিল দুদক।

দুদকের নোটিসে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ওই ব্যক্তির নাম উল্লেখ না থাকলেও পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি সিনহাই যে সেই ব্যক্তি, সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে সে খবর আসে। জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই দুজনের আইনজীবী বিচারপতি সিনহার সঙ্গে লেনদেনের কথাই বলেন।

আরও পড়ুন: