জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিনিময়ে হাসিনা-মোদী

একে অপরকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীI

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2018, 01:36 PM
Updated : 19 Sept 2018, 04:37 AM

বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন এবং ঢাকা থেকে টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রতিবেশী দু’দেশের সরকার প্রধান এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ঢাকায় গণভবন থেকে শেখ হাসিনা এবং নয়া দিল্লিতে নিজের কার্যালয় থেকে মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেনI

শুরুতেই শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে মোদীকে তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন।

পরে নিজের বক্তব্যের সময় শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছা জানান মোদী।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার জন্মদিন।

এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও মোদী যৌথভাবে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং রেলওয়ের দুটি প্রকল্পের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করোছিলেন একইভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে।

মোদী সে কথা মনে করে মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে বলেন, “এটা দু’দেশের মধ্যে প্রগাঢ় সম্পর্কের প্রতীক।

“আমরা শুধু প্রতিবেশী দেশই না, আমরা এক পরিবারের মতো, আমরা একে অন্যের দুঃখে হাত বাড়িয়ে দিই। আমরা প্রমাণ করেছি, চাইলে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সব সমস্যা সমাধান করা যায়।”

বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পকে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ‘নতুন অধ্যায়’ হিসাবে বর্ণনা করেন মোদী।

১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপ লাইন বাংলাদেশের উন্নয়নেও সহায়তা করবে বলে মনে করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

এই পাইপলাইনে তেল সরবরাহ শুরু হলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে কম দামে তেল পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ঢাকা থেকে টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণের বিষয়ে মোদী বলেন, এতে শুধু যাত্রী পরিবহনই হবে না, পণ্যও পরিবহনও সহজ হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে মোদী বলেন, “আপনার গতিশীল নেতৃত্ব ছাড়া দু’দেশের মধ্যে এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সম্ভব হতে না।”

ভবিষ্যতেও দু’দেশের মধ্যে এই সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে আশাপ্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের মধ্যে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।”

প্রকল্পগুলোতে সহায়তার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে এই যোগাযোগ বাংলাদেশ এবং ভারত, উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতার বন্ধনকে নিশ্চিতভাবে আরও সুদৃঢ় করবে। প্রধানমন্ত্রী আপনার এই উদারতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে বিভিন্নমুখী উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা।

ভারতের শিলিগুড়ি হতে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনকে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ইতিহাসে ‘মাইলফলক’ অভিহিত করেন তিনি।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এ ধরনের আরও প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন সম্ভাবনার দিগন্ত আরও সম্প্রসারিত হবে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণ সবসময়ই ভালো প্রতিবেশী।”

বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত সরকারের নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতা প্রত্যাশা করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত যে, আমাদের জনগণের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের মধ্যে উপস্থিত হবে।”

ভিডিও কনফারেন্সে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং ভারতের পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস বিষয়ক মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও বক্তব্য রাখেন।