ট্রেন ছাড়ছে দেরিতে

ঈদ যাত্রার দ্বিতীয় দিনে ঢাকা থেকে অধিকাংশ ট্রেনই ছেড়ে যাচ্ছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরি করে।

নিজস্ব প্রতিবেদকসাজিয়া আফরিনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2018, 12:10 PM
Updated : 18 August 2018, 02:32 PM

শনিবার সকাল থেকেই বাড়ি ফেরা মানুষের প্রচণ্ড ভিড় কমলাপুর স্টেশনে, সেই সাথে যোগ হয় ট্রেন দেরিতে ছাড়ার ফলে ভোগান্তি।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার চারটি বিশেষ ট্রেনসহ মোট ৬৮টি ট্রেনের ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা।

দিনের প্রথম ট্রেন রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস দিয়েই শুরু হয় বিলম্ব যাত্রা। ভোর ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশন ছাড়ে সকাল ৭টায়। এরপর খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৬টা ২০ মিনিটের পরিবর্তে ছাড়ে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তেজগাঁওয়ে একটি ট্রেনের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে সেটি প্রায় একঘণ্টা বন্ধ ছিল, যার প্রভাব অন্য ট্রেনগুলোর উপর পড়ে। ফলে অন্যন্য ট্রেনগুলোও দেরিতে ছেড়ে যায়।  

সকাল ৮টার দিনাজপুর চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ১০টার পর এবং সকাল ৯টার রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ১০টায় যাত্রা শুরু করে।

দিনের প্রথম ঈদ স্পেশাল ট্রেন লালমনির এক্সপ্রেস সকাল সোয়া ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও এটি স্টেশন ছেড়ে যায় সকাল সাড়ে ১১টায়।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্টেশনে আসেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আজ বিকেলের মধ্যেই ট্রেনের সময়সূচী ঠিক করার চেষ্টা করা হবে।

“যাত্রীর চাপ বেশি হওয়ায় তাদের উঠানামা ও ট্রেনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিলম্ব হচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চ সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করছি, যাতে প্রতিটি মানুষ নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরতে পারে।" 

দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মোট ৪০টি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যায়।  

সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস দুপুর ১২টার জায়গায় দুপুর ২টার দিকে ছাড়ে এবং রাজশাহীগামী সিল্কসিটি দুপুর আড়াইটায় ছাড়ার কথা থাকলেও দুপুর সাড়ে ৩টায়ও ছাড়তে পারেনি।

দুপুর পর্যন্ত অন্যান্য ট্রেনও কমপক্ষে আধা ঘণ্টা দেরি করে স্টেশন ছাড়ে।

এদিকে ট্রেনের সময়সূচি ঠিক না থাকায় গরমের মধ্যে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

ঢাকার মানিকদির বাসিন্দা লতিফা বেগম তিন সন্তান নিয়ে স্বামীর সাথে রাজশাহী যাওয়ার জন্য স্টেশনে বসে ছিলেন দুপুর দেড়টা থেকে।

প্রিয়জনের সঙ্গে কোরবানির ঈদের ছুটি কাটাতে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। শনিবার ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "টিকিট কেটে রেখেছি ১০ দিন আগে। ট্রেনের শিডিউলের একঘণ্টা আগে চলে এসেছিলাম, বাচ্চাগুলা আর থাকতে চাচ্ছে না। এত গরম, কিছু খাওয়াতেও পারছি না।"

বেসরকারি চাকরিজীবি শাহেদ আলম অপেক্ষা করছিলেন সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের জন্য। প্রায় দুই ঘণ্টা হয়ে গেলেও ট্রেন না আসায় চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি।

পাশে বসা তার স্ত্রী মোহনা আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মেনে নিয়েছি। প্রতিবছরই ঈদে এমন হয়। কোনোদিন ঠিক হবে বলেও মনে হয় না।”

লালমনি এক্সপ্রেসের যাত্রী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুস্তাফিজুর রহমান বায়েজিদ বলেন, "সংগ্রাম করে টিকেট কিনি, সংগ্রাম করে বাড়ি যাই, আবার সংগ্রাম করে ফেরত আসি ঢাকায়। প্রতিবছর তো তাই চলছে।"