বড় পুকুরিয়া মাইনিং কোম্পানির সাবেক ৩ এমডিকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক তিন ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2018, 02:57 PM
Updated : 14 August 2018, 02:57 PM

মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান ও দুদকের উপ-পরিচালক সামছুল আলম নেতৃত্বে যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তারা হলেন- প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, আমিনুজ্জামান ও মিজানুর রহমান।

তাদের সঙ্গে সাবেক আরেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কামরুজ্জামানকে তলব করা হলেও তিনি হাজির হননি বলে জানান প্রনব।

এদিকে কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় পেট্রোবাংলার ৩২ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুদক। তাদেরকে ১৬ থেকে ৩০ অগাস্টের বিভিন্ন দিন দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ১ অগাস্ট বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম নুরুল আওরঙ্গজেব ও মহাব্যবস্থাপক (সারফেস অপারেশন) সাইফুল ইসলাম সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

কয়লা দুর্নীতির ঘটনায় এর আগে গত ২৪ জুলাই দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান।

পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।

এজাহারে বলা হয়, খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়া, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নূর-উজ-জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) একেএম খালেদুল ইসলামসহ খনির ব্যবস্থাপনায় জড়িত অপর আসামিরা ওই কয়লা চুরির ঘটনায় জড়িত।

অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই ব্যবস্থাপক, উপ-ব্যবস্থাপক ও সহকারী ব্যবস্থাপক পর্যায়ের কর্মকর্তা।

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর নূর-উজ-জামান ও খালেদুলকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পেট্রোবাংলা। হাবিব উদ্দিনকে সরিয়ে আনা হয়েছে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দপ্তরে। কাশেম প্রধানিয়াকে সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

কয়লা দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধানে নামার পর দুদক ১৯ আসামিসহ ২১ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রা ঠেকাতে ইমিগ্রেশন বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে।

বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির কয়লা দিয়ে চলে পাশে অবস্থিত ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লা খনির ইয়ার্ডেই থাকত। কিন্তু হঠাৎ করে কয়লা সঙ্কট দেখা দেওয়ায় গত ২২ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন।

মামলার পর দুদক কর্মকর্তারা পরিদর্শনে গিয়ে খনির ইয়ার্ডে দুই হাজার টন কয়লা পান, যদিও কাগজে-কলমে সেখানে এক লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা।