রবার্ট এফ কেনেডি হিউমান রাইটস অ্যাডভোকেসি অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডির সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের সরকার প্রধান মিয়ানমারের অসহযোগিতার বিষয়টি তোলেন।
কেরি কেনেডি রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
ইহসানুল করিম বলেন,“রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমার সংলাপ চালিয়ে গেলেও বাস্তবে কিছু না করার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,‘আমরা এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই বলেই মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপ চালাচ্ছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল, মিয়ানমার বাস্তবে কিছুই করছে না’।”
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গত বছরের অগাস্টে সেনা অভিযান শুরুর পর নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে আসছে।
আগে থেকে ৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল; এই দফায় আরও সাত লাখ আসার পর শরণার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ মিয়ানমার সরকার বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে শরণার্থীদের ফেরত নিতে গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে। তবে এরপর আর অগ্রগতি নেই।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ রোহিঙ্গা সঙ্কটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কেরি কেনেডির সঙ্গে আলোচনায় এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা হিসাবে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় কক্সবাজারের সাধারণ মানুষের চাষাবাদের জমি এবং বনভূমি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এরপরও নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের সাহায্যে বাংলাদেশের মানুষের এগিয়ে আসার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনাও জানান তিনি।
রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশে এসেছেন কেরি কেনেডি। এখানে আসার আগে তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ঘুরে এসেছেন।
রাখাইন পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কেরি কেনেডি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সেখানে কোনো বাড়ি ঘর বা অবকাঠামো এখনও নির্মাণ করা হয়নি।