বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসর হলেও দেশে ‘সাম্প্রদায়িকতার হুমকি বিরাজ করছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতার সমাধানে তরুণদের সামাজিক ঐকতানের চেতনায় সংযুক্ত করতে হবে।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর কসমস সেন্টারে ‘বাউল দর্শন, সাহিত্য ও সঙ্গীত’ নিয়ে আয়োজিত ‘কসমস সংলাপে’ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাম্প্রদায়িকতাকে এক ‘বিরাট চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, “ধর্মের নামে মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি এবং তাদের আলাদা করার অপচেষ্টা সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র হয়ে উঠেছে। জনগণ ব্রিটিশ আমল থেকে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বহন করছে এবং পাকিস্তান আমলে ও পরবর্তী সময়ে তা আরও বিস্তার লাভ করেছে।”
দেশের বিভিন্ন স্থানে বাউল সাধকদের উপর নিপীড়ন ও অত্যাচারের খবর বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে এসেছে।
নিজ দলের মন্ত্রী বা স্থানীয় সাংসদরা এসব ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে আখ্যা দিলেও তা মানতে নারাজ আসাদুজ্জামান নূর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেনভারের অর্থনীতির অধ্যাপক হায়দার এ খানের সভাপতিত্বে সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাহার খান।
অধ্যাপক হায়দার খান বলেন, “এই অস্থির সময়ে বাউল দর্শন, সাহিত্য ও সঙ্গীত নিঃসন্দেহে তাদের ঐতিহাসিক প্রগতিশীল ভূমিকা পালন করে যাবে। বাউল শিল্প ও দর্শন বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের বর্তমান স্লোগানের অংশ। মানবদেহ হচ্ছে সর্ব সত্যের আধার। এই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে বাউলরা চর্চা করেন নিগূঢ় ভক্তিমূলক আচার।
“বাউলরা মানবতাবাদী, যারা বিশ্বাস করেন জাতি ও ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষ সমান। গুরুর দীক্ষা নিয়ে একজন বাউল ক্রমেই হয়ে উঠেন একজন সাধক।”
লালন ফকির, হাছন রাজা, শাহ আবদুল করিম, কানাইলাল শীল, রাধারমণ দত্ত, শীতালং ফকির, আরকুম শাহ ও আমিরুদ্দিনের মতো সাধকরা বাউল গান ও সাধনায় সমৃদ্ধ করেছেন বাংলার সাংস্কৃতিক বিকাশের ধারাকে।
অনুষ্ঠানে লালন গবেষক ড. আনোয়ারুল করীম, বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক তপন কুমার বাগচী, লেখক ও গবেষক সুমন কুমার দাস এবং সঙ্গীত শিল্পী মাকসুদুল হক বাউল দর্শন, সাহিত্য ও সঙ্গীত নিয়ে বক্তব্য দেন।