‘জামায়াত-যোগ’ অস্বীকার লর্ড কারলাইলের

খালেদা জিয়ার আইনি পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড অ্যালেক্স কারলাইল বলেছেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং বাংলাদেশ সরকারের একজন মন্ত্রী তাকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জড়িয়ে যেভাবে বর্ণনা করেছেন, তা ‘অসত্য’ ও ‘মানহানিকর’।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2018, 11:24 AM
Updated : 24 March 2018, 03:54 AM

এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত না থাকলে ‘আইনি ব্যবস্থা’ নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প তার থাকবে না।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের দায়ে পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে পুরান ঢাকায় কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি হাই কোর্ট থেকে চার মাসের জামিন পেলেও সর্বোচ্চ আদালত তা স্থগিত করেছে।

এই প্রেক্ষাপেটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত মঙ্গলবার কার্লাইলকে আইনি পরামর্শক নিয়োগের ঘোষণা দিলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সূত্রপাত হয়।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে লর্ড কারলাইল বলেন, “আমি জামায়াতের একজন আইনজীবী ও লবিস্ট হিসেবে কাজ করছি বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা অসত্য এবং মামলা হওয়ার মত একটি বিষয়।”

যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য লর্ড কার্লাইল কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের চেয়ারম্যান৷ যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের স্বাধীন পর্যবেক্ষক হিসেবে প্রায় এক দশক কাজ করা এই আইনজীবী ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সের সাবেক প্রধান জন স্কারলেটের সঙ্গে মিলে এসসি স্ট্র্যাটেজি লিমিটেড নামে একটি পরামর্শ সেবা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন, যা বছর তিনেক আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে আলোচনায় আসে।   

আর বাংলাদেশে তিনি আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায়ের পর বিবৃতি দিয়ে, যেখানে তিনি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেন। 

সেই প্রসঙ্গ টেনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গত বুধবার বলেন, “একাত্তরের ঘাতকের লবিস্ট ছিল যে, সেই আইনজীবীকে ঢাকায় আনছে খালেদা জিয়ার দল। তার মানে হল, এখনও খালেদা জিয়া জামায়াতকে ছাড়ে নাই, একাত্তরের ঘাতকদের ছাড়ে নাই।”

আর যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে আন্দোলনের সংগঠক শাহরিয়ার কবির বলেন, “আমাদের ক্ষোভের বিষয় হচ্ছে, লর্ড কারলাইল শুধু একজন আইন ব্যবসায়ী নন, তিনি ব্রিটেনের আইনসভার সদস্য। ব্রিটেনের আইন সভায় একাত্তরের গণহত্যার নিন্দা করা হয়েছিল। বহু আইন প্রণেতা তখন এই গণহত্যার নিন্দা করেছেন। ব্রিটিশ সরকার এটার নিন্দা করেছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম-জনগণ এটার নিন্দা করেছে।”

শাহরিয়ার কবিরের অভিযোগ, ব্রিটিশ জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে লর্ড কারলাইল তার অফিসকে ‘অপব্যবহার  করেছেন’ জামায়াতের পক্ষে ওকালিতি করার জন্য, আর এখন তিনি খালেদা জিয়ার দুনীতি মামলা লড়বেন।

এ বিষয়ে লর্ড কারলাইল তার বিবৃতিতে বলেন, “বেগম জিয়ার আইনজীবী দলের সঙ্গে আমার যোগাযোগ পেশাগত জায়গা থেকে। আর হাউজ অব লর্ডসে আমার সদস্যপদের সঙ্গে খালেদা জিয়াকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই সাংঘর্ষিক নয়।”  

যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের রায়ের সমালোচনার বিষয়েও একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই ব্রিটিশ আইনজীবী। 

তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মান বজায় থাকছে কি না- সে বিষয়ে একজন আন্তর্জাতিক আইনজীবী হিসেবে আমি আমার মতামত সেখানে দিয়েছি ।”