তিনি বলেছেন, সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের বিধান থাকায় রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে পেরেছে সরকার।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার ‘টাইম ইজ নাউ: রুরাল অ্যান্ড আরবান অ্যাক্টিভিস্ট ট্রান্সফরমিং ওমেন্স লাইভস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় স্পিকার এ কথা বলেন।
সরাসরি ভোটের জন্য ৩০০ সংসদীয় আসনের বিপরীতে ১৯৭৩ সালে ১৫ আসন ছিল সংরক্ষিত নারী আসন। পরে তা বাড়িয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম সংসদে ৩০টি আসন করা হয়।
আইনের মেয়াদ না থাকায় চতুর্থ সংসদে ছিল না সংরক্ষিত নারী আসন। মেয়াদ না থাকায় অষ্টম সংসদের শুরুতেও ছিল না নারীদের সংরক্ষিত এ আসন।
তবে ২০০৪ সালে সংবিধানের চতুর্থদশ সংশোধনী এনে আসন বাড়িয়ে ৪৫ করা হয়। নবম সংসদেও ছিল ৪৫ আসন। এ সংসদেই ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীতে আরও ৫ আসন বাড়িয়ে সংরক্ষিত আসন করা হয় ৫০টি।
সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ ২০১৯ সালে শেষ হয়ে যাবে বলে সম্প্রতি তা আরও ২৫ বছর বাড়াতে সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এতে ক্ষোভ জানিয়ে নারী অধিকারকর্মীরা স্থানীয় সরকারের মতো সংসদেও নারী আসনে সরাসরি ভোট দাবি করেছেন।
আলোচনা সভায় সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “অনেক সময় শুনি কোটার মাধ্যমে কেন? আমি বলব, শুধু কোটার মাধ্যমে নয়, আমাদের সংবিধান নারীকে সরাসরি নির্বাচন করার জন্য ক্ষমতা দিয়েছে। নারীরা দুই ভাবেই আসতে পারছেন।
“যত দিন পর্যন্ত সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে যথেষ্ট সংখ্যক নারীকে আনতে না পারছি, ততদিন কোটার মাধ্যমে যে নারীরা আসবেন, সেটাও কিন্তু একটা ক্রিটিকাল ম্যাস তৈরির ক্ষেত্রে অবদান রাখছে।”
বাংলাদেশের নারী জনগোষ্ঠীকে ‘একটি বড় জনশক্তি’ ও ‘মেধার আধান’ উল্লেখ করে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নারী শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে যথাযথভাবে। তাদের মেধার মূল্যায়নও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
নারীর উত্তরণের ক্ষেত্রে উদ্ভূত নানা সমস্যাকে শিরিন শারমিন দেখছেন ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে।
পূর্ণ বেতনে মাতৃত্বকালীন ছুটির পাশাপাশি ডে কেয়ার সেন্টার, কর্মজীবী নারী হোস্টেল নির্মাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগ বাড়লে তাতে নারীরা উপকৃত হবেন বলেও মনে করেন তিনি।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনিন আহমেদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এম শহিদুল হাসান।