উচ্চ শব্দে গান: বৃদ্ধকে ‘মারধরের কথা স্বীকার’

পুরান ঢাকার ওয়ারিতে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করায় মারধরে এক বৃদ্ধ নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজন ‘দোষ স্বীকার’ করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2018, 07:51 PM
Updated : 20 Jan 2018, 08:28 PM

শুক্রবার নাজমুল হকের (৬৫) মৃত্যুর পর একই ভবনের অন্য এক ফ্ল্যাটের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন, তার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ও মেয়ে রাইয়ান এবং রাইয়ানের স্বামী মির্জা জাহিদ হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশের ওয়ারি বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চারজন গ্রেপ্তার হওয়ার পর মারধরের কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।”

এছাড়া ওই ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এই চারজনসহ তাদের পরিবারের সাতজন মিলে নাজমুল হককে ‘মারধর করতে দেখা গেছে’ বলে জানান তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ওয়ারির আর কে মিশন রোডের ওই ভবনের পাঁচতলার বাসিন্দা আলতাফের ভাগনে হৃদয়ের গায়ে হলুদ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে ছাদে জোরে গান বাজানো হচ্ছিল।

নাজমুল হক

ওই ভবনেরই নবম তলার একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দা নাজমুল হক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। গানের শব্দে নাজমুল আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ছেলে নাসিমুল হক ছাদে গিয়ে বাবার অসুস্থতার কথা বলে আস্তে গান বাজাতে বলেন।

এর জের ধরে আলতাফের ছেলে সাজ্জাদ শুক্রবার সকালে বাসার নিচে গিয়ে নাজমুল হক ও তার ছেলে নাসিমুলকে ডেকে পাঠান। তারা এলে আগের রাতের ওই ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় সাজ্জাদের পক্ষ নিয়ে তার বাবা আলতাফ, বোন রাইয়ান, ভগ্নিপতি জাহিদ ও আলতাফের ভাগনে হবু বর হৃদয়সহ সাতজন ওই বিরোধে যোগ দেন।

“কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নাসিমুলকে মারধর করা হলে তারা বাবা নাজমুল হক বাধা দিতে যান। তখন তাকেও মারধর করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন,” বলেন পুলিশ কর্মকর্তা ফরিদ।

নাজমুলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উপ কমিশনার ফরিদ উদ্দিন বলেন, “কোনো অনুমতি ছাড়াই তারা সেখানে গানবাজনার আয়োজন করেছিল। এসব অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। এই ঘটনায় মামলা করার পরপরই আমরা ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করি।”

ঘটনাস্থলে হৃদয় ছাড়াও আরও দুই নারী ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

ওয়ারি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম মিয়া জানান, গ্রেপ্তারদের শনিবার আদালতে পাঠিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। বিচারক সাজ্জাদ ও জাহিদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আলতাফ ও তার মেয়ে রাইয়ানকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।