এই তিন শিক্ষক হলেন- ওই কমিটির আহ্বায়ক তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল অনুষদের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান, কমিটির সদস্য যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ।
এক ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারে তিন ছাত্রীকে চাপ দেওয়ার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে হবে তাদের। তাদের আগামী ২৪ জানুয়ারি আদালতে হাজির হতে হবে।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন এ বি এম আলতাফ হোসেন। বুয়েটের পক্ষে ছিলেন সৌরভ কর্মকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এস এম নাজমুল হক।
অ্যাডভোকেট আলতাফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৫ সালে ‘র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে এক ছাত্রের বিরুদ্ধে ইভ টিজিংয়ের অভিযোগ’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেন তিন ছাত্রী।
অভিযোগ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি ওই বছরের ৩ জুন তদন্ত প্রতিবেদন দেয়।
আলতাফ বলেন, “কিন্তু তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাপ প্রয়োগ করে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের স্বীকারোক্তি নেয় তিন ছাত্রীর কাছ থেকে।
“স্বীকারোক্তি নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। পরে তারা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলেও তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।”
ওই বছরের ৩ জুন তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিলে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স এন্ড ডিসিপ্লিন’ ২৭ জুলাই ‘মিথ্যা অভিযোগ’ করায় ওই তিন ছাত্রীকে তিন টার্মের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার এবং হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে।
একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করেও ফল না পেয়ে হাই কোর্টে আসেন বুয়েটের ওই তিন ছাত্রী। আলাদা আবেদনে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চাপে অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়টি উল্লেখ করে শাস্তি দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন।
অ্যাডভোকেট আলতাফ কলেন, অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই শাস্তি ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনলোজি অর্ডিন্যান্স ১৯৬১ এর ধারা ৬ এর লঙ্ঘন।
“ওই পৃথক তিনটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের অগাস্টে হাই কোর্ট তাদের শাস্তি স্থগিত করে রুল জারি করে। সেই রুলের ছূড়ান্ত শুনানির পর বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য রেখেছিল আদালত।
“কিন্তু রায় ঘোষণার আগে বুয়েটের আইনজীবীর উপস্থাপিত ওই তদন্ত প্রতিবেদনে ইভ টিজিংয়ের ঘটনায় সত্যতা মেলে আদালতের পর্যবেক্ষণে। আর এই কারণেই প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে তদন্ত কমিটির তিন সদস্যকে তলব করেছে হাই কোর্ট।”