শনিবার বগুড়ার নন্দীগ্রাম থেকে গ্রেপ্তারের পর দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি (বগুড়া পুলিশ সুপারের দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. আসাদুজ্জামান জেএমবির এই শুরা সদস্য ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রধানকে নিয়ে এই তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ২০০৫ সালে নওগাঁ জেলার জেএমবি প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর সারা দেশে বোমা হামলার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আবু সাঈদ। দুই বছর পর ভারতে পালিয়ে গিয়ে ‘২০০৯ সালে মুর্শিদাবাদের জেএমবি সদস্য ইয়াদুলের মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করে সেখানে জঙ্গি তৎপরতা শুরু করে’।
‘মো. আবু সাঈদ ওরফে আ. করিম ওরফে তৈয়ব ওরফে তালহা ওরফে শ্যামল শেখ ওরফে হোসাইন ওরফে সাজিদ ওরফে ডেঞ্জার ওরফে শাকিল ওরফে মোখলেছ ওরফে শফিক’ নামে জেএমবির এই নেতাকে শুক্রবার রাত ১টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর বাজার থেকে অস্ত্র ও চাকুসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
কে এই ‘সাইদ ওরফে তালহা’
# মো. আবু সাঈদ ওরফে করিম ওরফে শ্যামল শেখ কুষ্টিয়া জেলার শ্রীকোল চর চাঁদপুরের শহীদুল্লাহ শেখের ছেলে।
# ২০০২ সালে জে এমবিতে যোগ দিয়ে উত্তরাঞ্চলে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন।
# ২০০৪ সালে রাজশাহী জেলার সামরিক প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
# ২০০৪ সালে রাজশাহীর বাগমারায় হামিদকৎসা গ্রামে বাংলাভাই ও শায়েখ আব্দুর রহমানের সাথে সর্বহারা নিধনে অংশ নেন।
# ২০০৫ সালে জেএমবির নওগাঁ জেলার প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে ওই বছর ১৭ অগাস্ট সারা দেশে বোমা হামলার সময় নওগাঁয় তিনি চারটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
# ওই ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ড হলে ২০০৭ সালে সাঈদ ভারতে পালিয়ে যান।
# ২০০৯ সালে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায় জেএমবি সদস্য ইয়াদুলের মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করে সেখানে জঙ্গি তৎপরতা শুরু করেন।
# ২০১০ সালে ভারতের নদীয়া জেলার জেএমবি নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
# ২০১২ সালে নদীয়া জেলার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম ও বর্ধমান জেলারও দায়িত্ব নেন।
# ২০১৪ সালে বর্ধমানে দায়িত্ব পালনকালে ২ অক্টোবর খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এরপর ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন অ্যাজেন্সি (এনআইএ) আবু সাঈদকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ লাখ ভারতীয় রুপি পুরস্কার ঘোষণা করলে তিনি বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।
# ২০১৫ সালের শেষের দিকে ‘নব্য জেএমবিতে’ যোগদান করে।
# সাংগঠনিক কাজে দক্ষ হওয়ায় ২০১৭ সালের প্রথম দিকে দক্ষিণাঞ্চলের সামরিক প্রধান হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং শুরা সদস্যের দায়িত্ব নেন।