এখনও ক্লাসে ফেরেনি বুয়েট শিক্ষার্থীরা

বহিরাগত হামলাকারীদের শাস্তি এবং পলাশী ও বকশীবাজার মোড়ে স্থায়ী ফটক নির্মাণসহ আট দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।

তারেক হাসান নির্ঝরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2017, 05:41 PM
Updated : 1 Nov 2017, 06:45 PM

বুধবারও তারা কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেননি। বুয়েট কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরতে বললেও আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা দাবির বাস্তবায়ন না দেখে পিছু হটবেন না।

বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে বহিরাগত তাড়াতে অভিযান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গত শুক্রবার সংঘর্ষে জড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থীরা। তাকে বুয়েটের ৫ ছাত্র আহত হন।

হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে তারপর থেকে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে রয়েছে বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

এই অবস্থায় মঙ্গলবার ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন, পলাশী ও বকশীবাজার মোড়ে অস্থায়ী 'ব্যারিয়ার গেট' স্থাপন, অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, শহীদ মিনার এলাকায় ফুটওভার ব্রিজের প্রবেশমুখ বন্ধ করা, পলাশী ও বকশীবাজার মোড়ে অতিরিক্ত সিকিউরিটি ক্যামেরা স্থাপন এবং স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা মাদক বিক্রেতা রাজু ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ প্রশাসনকে তাগাদা দেওয়ার কথা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরতে বলা হয়।

তবে তাতেও শিক্ষার্থীরা সাড়া দিচ্ছে না।

আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আহসান রাব্বী খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের শিক্ষকরা আমাদের প্রত্যেকটা দাবি মেনে নিতে সহমত।

“উনারা এগুলো বাস্তবায়নের জন্য আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন। সেজন্য উনাদের সময় দিয়েছি আমরা। যদি সময়ের মধ্যে সবকিছু না হয়, সেক্ষেত্রে আমরা নতুন কর্মসূচিতে যাব।”

তাহলে কেন ক্লাসে যাচ্ছেন না- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “বাস্তবতার নিরিখে দেখা যায় যে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও পরবর্তী সময়ে তারা এগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখায়। তাই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে যচ্ছি না।”

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আরেক সমন্বয়ক যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী পার্থ প্রতীম দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আমাদের দাবি পূরণের জন্য ১০ তারিখ পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের ক্লাস ও ল্যাবে যাচ্ছি না।”

ক্লাসে না ফিরলেও সোমবারের পর সমাবেশের মতো কর্মসূচি দিচ্ছেন না বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের বিষয়ে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের যে দাবি-দাওয়া ছিল, তার একটি ছাড়া সবগুলোই আমরা পূরণ করেছি। ওদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করেছি। কিন্তু পলাশীর মোড়ে গেট বসানো ছাড়া ওরা ক্লাসে যেতে রাজি হচ্ছে না।”

তাতে আপত্তি কোথায়- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এরকম পাবলিক রাস্তায় আমরা তো চাইলেই গেট বসাতে পারি না। উপাচার্য মহোদয় বৃহস্পতিবার দেশে ফিরবেন। তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।”

এদিকে একই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পক্ষ থেকে আবাসিক শিক্ষক আব্দুর রহিমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটি ইতোমধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনায় ‘জড়িত’ চারজনের জবানবন্দি নিয়েছে বলে হলে দায়িত্বরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।