সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উপ-উপাচার্য আমির হোসেন শহীদ মিনারে গিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন তুলে নিতে অনুরোধ করেন।
এরপর আমির হোসেন শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ শেখ মঞ্জুরুল হক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক সহযোগী ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।
গত ২৬ মে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর উপাচার্য ভবনে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে প্রশাসন ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৪২ শিক্ষার্থী।
পরে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যে শনিবার দুপুর থেকে অনশনে যান দুই শিক্ষার্থী। পরে তাদের সাথে যুক্ত হন আরো ছয় শিক্ষার্থী।
এরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সর্দার জাহিদুল ইসলাম ও তাহমিনা জাহান তুলি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪০তম আবর্তনের শিক্ষার্থী পূজা বিশ্বাস, আইন ও বিচার বিভাগের ৪৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী খান মুনতাসির আরমান, দর্শন বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ রুদ্র, বাংলা বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী নাইমুল আলম মিশু, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রাতুল খালিদ এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৪৫ তম আবর্তনের তাসনুভা তাজিন ইভা।
অনশনকারীদের মধ্যে সর্দার জাহিদ ও পূজা বিশ্বাসের অবস্থা ভালো নয় বলে দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক বীরেন্দ্র কুমার বিশ্বাস।
অনশন ভাঙানোর আগে উপ-উপাচার্য আমির হোসেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বলেন, “মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পুলিশি হয়রানি বন্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে বিকালে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ও দুপুরে প্রাধ্যক্ষ কমিটির পক্ষ থেকে দুটি প্রতিনিধি দল অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের অনশন থেকে ফিরিয়ে একটি ‘যৌক্তিক সমাধানে যাওয়ার’ কথা জানান।
পরে তারা উপাচার্যের সাথে কথা বলার পর সন্ধ্যায় উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে তারা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে আসেন।
ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবির ব্যবহার নিয়ে দুঃখ প্রকাশ
এদিকে শিক্ষার্থীদের শাস্তি চেয়ে করা আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের মৌন মিছিলের ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ও স্মৃতিসৌধের ছবি ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ফেইসবুক স্ট্যাটাসে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর সাধারণ সম্পাদক ও উপ-উপাচার্য আমির হোসেন।
তিনি বলেন, “এই মিছিলে যে ব্যানার ব্যবহার করা হয় তাতে ফরমেটজনিত ত্রুটির কারণে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যানারের নিচের দিকে মুদ্রিত হয়। এই কারণে বঙ্গবন্ধুর অনুসারীগণের কেউ কেউ আহত হতে পারেন। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।”
সোমবার দুপুরে ওই মিছিলের ব্যানারের নীচের দিকে পায়ের কাছে বঙ্গবন্ধু ও স্মৃতিসৌধের ছবির ব্যবহার করা হয়েছিল।