জাবি শিক্ষার্থীদের মামলা তোলার সিদ্ধান্ত হয়নি সিন্ডিকেটে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ভবনে ভাংচুরের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের করা মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2017, 03:10 PM
Updated : 16 July 2017, 03:25 PM

রোববার দুপুরে জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে এ তথ্য জানান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আমির হোসেন।

তবে মামলা তুলে নেওয়ার দাবিতে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে চার শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন দ্বিতীয়দিনের মতো চলতে থাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুপুরে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

‘মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ারে নেই’ দাবি করে অধ্যাপক আমির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি এখন রাষ্ট্রপক্ষে চলে গেছে, চাইলেই এটি প্রত্যাহার সম্ভব না, একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে সবাইকে। এজন্য পর্যাপ্ত সময়ও প্রয়োজন।

“আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনকারী উভয় পক্ষের আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে মামলার বিষয়ে একটি শান্তিপূর্ণ উপায় খোঁজ করা যেতে পারে।”

তিনি বলেন, “সিন্ডিকেট সভা থেকে অনশনরত ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করা হয়েছে তাদের আন্দোলনের দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন না ঘটাতে।”

গত ২৬ মে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর উপাচার্য ভবনে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে প্রশাসন ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৪২ শিক্ষার্থী।

পরে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যে শনিবার দুপুর থেকে অনশনে যান চার শিক্ষার্থী।

মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনে শিক্ষার্থীরা

এরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সর্দার জাহিদুল ইসলাম ও তাহমিনা জাহান তুলি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪০তম আবর্তনের শিক্ষার্থী পূজা বিশ্বাস এবং আইন ও বিচার বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী খান মুনতাসির আরমান।

তাদের অনশন স্থানে অবস্থান করছেন আন্দোলনরত অন্য শিক্ষার্থীরা।

এদিকে সিন্ডিকেট সভা থেকে শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হলেও মামলা প্রত্যাহারে কর্তৃপক্ষের আশ্বাস না পেলে অনশন ভাঙবেন না বলে জানিয়েছেন অনশনকরারীরা।

অনশনে থাকা সর্দার জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমি সিন্ডিকেটের এমন সিদ্ধান্তের জন্য এখানে অনশনে আসিনি। আমি এসেছি আমার বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত এখানেই থাকব। বিশ্ববিদ্যালয় মামলা করেছে, তারাই বুঝবে কি করে মামলা প্রত্যাহার করবে।”

এর আগে দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেছিলেন, “মামলাটি এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ারে নেই, রাষ্ট্রপক্ষে চলে গেছে। তবে শিক্ষার্থীরা যদি তাদের ওই দিনের (উপাচার্যের বাসভবন ভাংচুরের দিনের) কাজের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে তাহলে আমরা রাষ্ট্রের কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলব, তাছাড়া না।”

সিন্ডিকেটের নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক নজির আমিন চৌধুরী জয় বলেন, “আমরা সবার সাথে কথা বলে সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আনু্ষ্ঠানিক বক্তব্য জানাব।”