গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের জানমাল রক্ষা, নিরাপত্তা, ক্ষতিপূরণ, স্বাধীনভাবে চলা-ফেরার সুযোগ দিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন হয়েছে।
Published : 16 Nov 2016, 02:44 PM
রংপুর চিনিকলের বিরোধপূর্ণ জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের সময় কোন কর্তৃত্ববলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে- তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে এই রিট আবেদনে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার পক্ষে বুধবার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করা হয়।
আবেদনকারীদের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও কুমার দেবুল দে জানিয়েছেন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য তোলা হবে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, জন প্রশাসান সচিব, শিল্প সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ মহাপরির্শক, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান, রংপুর সুগার মিল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাহেবগঞ্জ সুগার কেইন ফার্মের উপ মহাব্যবস্থাপককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
জেড আই খান পান্না সাংবাদিকদের বলেন, “রিটে সাঁওতালদের জানমাল রক্ষায় নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি তাদের ওপর হামলা, প্রাণহানী ও উচ্ছেদ কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।”
এরপর সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে বিরোধপূর্ণ চিনিকলের জন্য অধিগ্রহণ করা ওই জমিতে কয়েকশ ঘর তুলে সাঁওতালরা বসবাস শুরু করেন। গত ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ জমি উদ্ধার করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষের সময় সাঁওতালদের বাড়িঘরে লুটপাট হয়।
পুলিশের ভাষ্য, তারা সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায়। ওই ঘটনায় নিহত হন তিন সাঁওতাল, আহত হন অনেকে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই জমি সাঁওতালদের ছিল না। ‘ভূমিদস্যুরা’ সাঁওতালদেরকে ‘ব্যবহার করেছে’। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সাঁওতালদের দিয়ে ‘দখল করিয়ে পরে নিজেদের দখলে নেওয়া’।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উপর গুলিবর্ষণের ওই ঘটনায় সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
জেড আই খান পান্না বলেন, রিট আবেদনে সাঁওতালদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। তারা যেন স্বাধীনভাবে, নির্বঘ্নে তাদের এলাকায়, গ্রামে চলাফেরা করতে পারে সে বিষয়েও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।