গত ১১ সেপ্টেম্বর এসব কমিশন গঠন করা হয়।
Published : 19 Sep 2024, 02:17 PM
রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে যে ছয়টি কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, সেই সব কমিশনের প্রধানদের সঙ্গে প্রথমবারের মত বৈঠক করতে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন তার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে নির্বাচন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে কমিশন গঠন করার ঘোষণা আসে গত ১১ সেপ্টেম্বর।
ওই দিন দেশের ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে এসব খাতের সংস্কার কমিশনের প্রধান করার ঘোষণাও দেন ইউনূস।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। বদিউল আলম মজুমদার একজন অর্থনীতিবিদ, রাজনীতি বিশ্লেষক, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়নকর্মী হিসেবে পরিচিত।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট’-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সাবেক স্বরাষ্ট্র ও সংস্থাপন সচিব সফর রাজ হোসেন। কুমিল্লা ও গাইবান্ধার জেলা প্রশাসকও ছিলেন।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমানের নাম ঘোষণা করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
আবু নাঈম মমিনুর রহমান ২০০৯ সালের জুলাইয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ২০১১ সালে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর পদত্যাগ করেন বিচারপতি মমিনুর রহমান।
তিনি পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে। পরে আইন নিয়ে পড়াশোনা করে ১৯৭২ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৭৪ সালে হাইকোর্ট বিভাগে, পরে ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এর পরপরই হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ২০০৯ সালে তিনি আপিল বিভাগে বিচারক পদে নিয়োগ পান নাঈম মমিনুর রহমান।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান হয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের প্রধান।
একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনেরও একজন ট্রাস্টি এবং আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের সদস্য। ২০১৫ সালের মে মাসে তিনি বিশ্বব্যাংক কর্তৃক গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম ফর সোশ্যাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।
সংস্কার নিয়ে ৬ কমিশন গঠনের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেতৃত্ব দেবেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।
সম্প্রতি তাকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে মুয়ীদ চৌধুরী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওর পদে আনা হয়, এই পদে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০১ সালে লতিফুর রহমান নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন মুয়ীদ চৌধুরী। নবম সংসদে ২০০৯ সালে আওয়ামী সরকার গঠন করলে নিয়োগ পাওয়ার ১৯ দিনের মাথায় বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয় মুয়ীদ চৌধুরীকে।
এছাড়া সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব প্রথমে দেওয়া হয়েছিল আইনজীবী শাহদীন মালিককে। তার নাম ঘোষণার ১০ দিনের মাথায় এ পদে পরিবর্তন আসে বুধবার। আইনজীবী শাহদীন মালিকের জায়গায় এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রিয়াজকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিসটিংগুইশড প্রফেসর আলী রিয়াজ দীর্ঘদিন থেকে রাষ্ট্র ও সরকার নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করছেন। তিনি আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (এআইবিএস) সভাপতি ও আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র অনাবাসিক ফেলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক আলী রীয়াজ প্রথমে যুক্তরাজ্য ও পরে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষার জন্য যান। পরবর্তীতে ইস্ট-ওয়েস্ট সেন্টার ফেলোশিপে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৯৩ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পিএইচডি করেন।