তারা হরকাতুল জিহাদের খুলনা বিভাগীয় বিভিন্ন পদবীর নেতা বলে র্যাবের ভাষ্য।
Published : 13 Feb 2023, 03:53 PM
রাজধানীর মালিবাগ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তাররা হলেন, আব্দুল কুদ্দুস (৫৭) ও মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে সালাউদ্দিন (৩৫)। তারা হরকাতুল জিহাদের খুলনা বিভাগীয় বিভিন্ন পদবীর নেতা বলে র্যাবের ভাষ্য।
রোববার রাতে মালিবাগে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ সোমবার জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আব্দুল কুদ্দুস হুজি-বির যশোর জেলার আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। পাশাপাশি সে যশোর জেলার শেকহাটি এলাকায় ওবায় বিন কাব মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক। ২০০৭ সালে ঝিনাইদহ সদর থানার একটি মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।”
২০০৭ সাল থেকে ১০ বছর ২ মাস সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পান কুদ্দুস। এরপর আবারও হুজি-বির সাংগঠনিক কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে দল পুর্নগঠনে যশোর, মাগুরা এবং নড়াইল জেলার বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় নিয়মিত গোপন বৈঠক শুরু করেন বলে র্যাবের ভাষ্য।
আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, “কুদ্দুস মাদ্রাসার যুবকদের মনে সমাজবিদ্বেষী মনোভাব ছড়িয়ে দিত এবং প্রচলিত সমাজের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতা চালানোর মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার কথা বলে তাদের মগজ ধোলাই করত।”
র্যাবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার সিরাজুল ইসলাম ২০০১ সালে যশোরে কোল্ডস্টোরেজের নাইটগার্ড হিসেবে চাকরি করতেন। সেই সময় তিনি হুজি-বিতে যোগ দেন।
আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, সিরাজুল ছিলেন যশোর জেলায় হুজি-বির ‘রিক্রুটার’ এবং অর্থনৈতিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত।
“বিদেশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সাথে যোগসাজশে হুজি-বির অভ্যন্তরীণ ব্যয়ভার বহনের অর্থ যোগানের ব্যবস্থাও সিরাজুল করতেন।”
তিনি বলেন, “সে (সিরাজুল) ছদ্মবেশে রঙ মিস্ত্রির কাজ করতেন এবং হুজি-বির সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল গোয়েন্দা নজরদারি চালাতেন।”
র্যাবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে সিরাজুলের নামে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় যশোরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ ২০১১ সালে তাকে গ্রেপ্তার করে। ২০১২ সালে জামিনে বের হওয়ার পর তিনি আর ওই মামলার শুনানিতে হাজিরা দেননি।
“তখন থেকেই সে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে থাকে। আত্মগোপনে থাকাকালে কখনও সালাউদ্দিন, কখনও রিয়াজুল ইসলাম, কখনও আমির ওরফে আব্দুল্লাহ ছদ্মনাম ব্যবহার করত সে,” বলেন আরিফ মহিউদ্দিন।
তিনি বলেন, “২০২২ সাল থেকে জঙ্গি আব্দুল কুদ্দুস এবং সিরাজুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকা বেশ কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গি সদস্য মিলে একটি বড় ধরনের জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করে আসছিল।
“সেই পরিকল্পনা সফল করার জন্য তারা বেশ তৎপরতা চালাতে শুরু করে এবং নিয়মিত গোপন বৈঠকের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও কর্মী সংগ্রহের কাজ বেগবান করে।”
গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন।