উপদেষ্টা পরিষদের সংখ্যা বাড়ানোর কোনো আলোচনা ‘আপাতত নেই’ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Published : 11 Nov 2024, 05:35 PM
অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের ‘গতি ও দক্ষতা বাড়াতে’ উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেছেন, “কতগুলো জায়গাতে আমরা মনে করেছি কাজের গতি এবং দক্ষতা দুটোই বাড়ানো প্রয়োজন; সেই প্রেক্ষিতে কারো কারো কাজের চাপ কমাতে সেখানে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে নতুন উপদেষ্টা পেয়েছি।”
আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে সরকারের আরও দৃশ্যমান কাজ ও জিনিসপত্রের দাম নাগালের মধ্যে রাখা নিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা, দপ্তর পুনর্বণ্টনে সেগুলোকেও ‘বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে’ বলে জানান পরিবেশ উপদেষ্টা।
সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বাংলাদেশে উদ্ভিদের লাল তালিকা’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি দপ্তর পুনর্বণ্টন নিয়ে কথা বলেন।
ব্যবসায়ী শেখ বশির উদ্দিন, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।
তাদের মধ্যে শেখ বশির উদ্দিনকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফারুকীর হাতে এসেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। মো. মাহফুজ আলমকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্ত্রণালয়ের ভার দেওয়ার তথ্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গেজেটে দেওয়া হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজকে কোন মন্ত্রণালয় দেওয়া হবে জানতে চাইলে রিজওয়ানা বলেন, “দপ্তর দেওয়া হবে এমন কোনো আলোচনা নেই। তিনি যেভাবে কাজ করছিলেন সেভাবেই কাজ করবেন।”
এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের সংখ্যা বাড়ানোর কোনো আলোচনা ‘আপাতত নেই’ বলেও জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
নির্বাচন কবে হতে পারে, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “সংস্কারের প্রতিবেদনগুলো ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই পাওয়ার আশা করছে সরকার; এরপর শুধু হবে সংস্কারের কাজ। তবে নির্বাচন, জুলাই-অগাস্টের গণহত্যার বিচার, সংস্কার এই তিন বিষয়কে নিয়েই সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।
“খুবই স্বাভাবিক, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন চাইবে, নির্বাচন তো আমরাও চাই। রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারের দাবিকেও অস্বীকার করছে না। তারা সংস্কারের কথা বলছে, কিন্তু দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার।“
রাষ্ট্র পরিচালনায় কিছু ‘অকার্যকারিতা’ ঢুকেছে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, “যেগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসলে সারিয়ে নেওয়াটা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু অনেক দেরি হচ্ছে তেমনও না, মাত্র তিনমাসই তো সময় গেছে।”
উদ্ভিদ সংরক্ষণে ১ হাজার প্রজাতির লাল তালিকা
বাংলাদেশে উদ্ভিদ প্রজাতির সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য এক হাজার উদ্ভিদ প্রজাতির লাল তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা।
তিনি বলেন, তালিকায় ২৭১ প্রজাতিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত ২৫৬ প্রজাতিকে অপ্রতুল তথ্য এবং বাকি ৩৯৫ প্রজাতিকে বিপদাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে- যার মধ্যে ৫টি মহাবিপন্ন, ১২৭টি বিপন্ন এবং ২৬৩টি সংকটাপন্ন প্রজাতির।
আর ৭০ প্রজাতিকে প্রায় বিপদগ্রস্ত, ৭ প্রজাতিকে আঞ্চলিকভাবে বিলুপ্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া এক প্রজাতির বন্য পরিবেশকে বিলুপ্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।
হিমছড়ি, রেমা কালেঙ্গা এবং সুন্দরবন পূর্ব বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, কাপ্তাই ও মধুপুর জাতীয় উদ্যান- এই পাঁচ নির্বাচিত সংরক্ষিত বনাঞ্চলে স্থানীয় বনজীববৈচিত্রের উপর আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতির প্রভাব কমাতে জাতীয় ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রণয়নের পাশাপাশি এগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যয় সাশ্রয়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আসাম গাছ, আসাম লতা, রেফুজি লতা; লজ্জাবতী, ছন, কাশ, কচুরিপানা; মগকাটা, ল্যান্টানাসহ ১৭ টি ক্ষতিকারক আক্রমণাত্মক উদ্ভিদ প্রজাতি সনাক্ত করেছি। এগুলো এগুলো পরিবেশে বিপর্যয় ডেকে আনছে
“এসব প্রজাতির ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ, বাণিজ্যিকীকরণ রোধ এবং বর্তমান বাস্তুতন্ত্র থেকে অপসারণ করা হবে।”