“পাঁচ বছরের মধ্যে সব স্কুলে মিড ডে মিল চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।
Published : 02 Dec 2024, 11:28 PM
পঞ্চম শ্রেণি পাস করেও অর্ধেক শিশু ‘সঠিকভাবে বাংলা লিখতে, বলতে ও পড়তে পারে না’ বলে আক্ষেপ করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
ওই শিশুরা ‘গণিত পারে না’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। কোনো কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘ছাত্র কম, কিন্তু শিক্ষক বেশি’ থাকার কথাও তুলে ধরেছেন তিনি।
সোমবার রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ‘বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপদেষ্টা। সেখোনে তিনি এমন মন্তব্য করেন বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বিধান রঞ্জন বলেন, “প্রাথমিকের সফলতা হল অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে স্কুলে নিতে পারছি, ঝরে পড়া কমছে। ব্যর্থতা হল পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পরও ৫০ শতাংশ বাচ্চা সঠিকভাবে বাংলা লিখতে, বলতে ও পড়তে পারে না; গণিত করতে পারে না।
“শিশুরা স্কুলে যাওয়ার আগেই মাতৃভাষা আয়ত্ত করে। তারা যেন মাতৃভাষা লিখতে-পড়তে পারে, বলতে পারে, গণিতের ভাষা বুঝতে পারে, সেভাবে তাদের গড়ে তুলতে হবে। শরীরচর্চা, সংগীত চর্চা ও চিত্রাঙ্কনে আগ্রহী সৃষ্টি করতে হবে; নৈতিকতা শেখাতে হবে।”
পর্যায়ক্রমে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘মিড ডে মিল’ চালুর প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পাঁচ বছরের মধ্যে সব স্কুলে এটি চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
‘স্কুলের খেলার মাঠ যেন দখল হয়ে না যায়’ সেদিকে খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেন উপদেষ্টা।
শিক্ষকসহ অন্যান্য নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘সাইকোলজি টেস্টের’ ব্যবস্থা থাকা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, “সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পাবেন। ৩২ হাজার প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। সেগুলোতে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।”
তিনি বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামসহ অনেক স্থানে সুন্দর স্কুল আছে, ছাত্র নাই। কোথাও ছাত্র কম, শিক্ষক বেশি। রংপুর অঞ্চলের ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ২৪:১। এটা খুব ভালো ।”
চর অঞ্চলের জন্য চরভাতা চালু করার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রাথমিকে শতভাগ উপবৃত্তি দেই, কিন্তু সেটা সঠিকভাবে হয় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উপবৃত্তি নিচ্ছে, কিন্তু তারা লেখাপড়া করছে অন্যখানে। যে লক্ষ্যে উপবৃত্তি চালু করা হয়েছিল, তার সুফল আসছে না।”
সভায় অন্যদের মধ্যে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।