কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সারওয়ার মাসুদ বলেন, প্রথম ছয়দিন সব ঠিক থাকলেও সোমবার বিকালের পর থেকে যাত্রীদের ভিড় আর সামলানো যায়নি।
Published : 09 Apr 2024, 12:17 PM
এবারের ঈদে ট্রেনযাত্রার শেষদিন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খল অবস্থা। ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিয়ে সকাল থেকে চলছে ট্রেন। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের কোনো ট্রেনের ভেতরে, ছাদ ছিল যাত্রীবোঝাই।
ঈদযাত্রার অন্যদিনগুলোতে স্টেশনে ঢোকার মুখেই টিকেট পরীক্ষা করতেন রেলের কর্মকর্তারা, মঙ্গলবার সেটিও চোখে পড়েনি।
মঙ্গলবার কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে লালমনিরহাটের বুড়িমারী এক্সপ্রেস, পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, রাজশাহী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে।
সকাল সোয়া ১০টায় একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা। ১০টার দিকে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই লোকজন ট্রেনে ওঠার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আসন দখলে রাখতে জয়দেবপুর, টঙ্গী এবং বিমানবন্দর স্টেশন থেকেও অনেকে ট্রেনে বসে ছিলেন। যাত্রীদের চাপে মুহূর্তেই ট্রেনের দরজাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে নারী-শিশুসহ অনেকে জানালা দিয়ে ভেতরে ঢোকেন।
নারায়ণগঞ্জের একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন মো. রাসেল হক। পার্বতীপুর যাওয়ার জন্য একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেছেন তিনি জানালা দিয়ে।
“অনেক কষ্ট করে টিকেট পাইছি। আবার ট্রেনে উঠতে গিয়ে ব্যাপক ঝামেলা হইছে। দরজা দিয়ে ওঠার কোনো জায়গা ছিল না।”
আরেক যাত্রী মো. রাকিবুল ইসলাম এসেছেন জয়দেবপুর থেকে। রাকিবুল নিজের আসন নিশ্চিত করতে ঢাকায় চলে এসেছেন।
“আমার টিকেট জয়দেবপুর থেকে, সেখান থেকেই ওঠার কথা। কিন্তু সেখান থেকে ট্রেনে ওঠা খুবই কঠিন। এ কারণে ট্রেনটি পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় আসার পথে জয়দেবপুরে থেকেই উঠে পড়েছি,” বলেন শ্রীপুরের একটি পোশাক কারখানার এই সহকারী প্রকৌশলী।
একটি বেসরকারি নির্মাণ প্রতষ্ঠানের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি অনলাইনে টিকেট কেটে রেখেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার ট্রেনে উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। দাঁড়ানো যাত্রীদের কারণে আসন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
“এখানে স্ট্যান্ডিং টিকেট বিক্রি হয়, এ কারণেই ভিড় বাড়ে বেশি। স্ট্যান্ডিং টিকেট না দিলে এত ভিড় হত না।”
মঙ্গলবার সকালের কয়েকটি ট্রেন ছেড়েছেও দেরিতে।
রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটা রওনা হয় ৯টা ৪০ মিনিটে। একতা এক্সপ্রেস বেলা সোয়া ১০টার বদলে আধাঘণ্টা দেরিতে পৌনে ১১টায় ছেড়ে যায়।
শেষদিনে এলোমেলো পরিস্থিতির কারণ জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সারওয়ার মাসুদ বলেন, প্রথম ছয়দিন সব ঠিক থাকলেও সোমবার বিকালের পর থেকে যাত্রীদের ভিড় আর সামলানো যায়নি।
“এবার ট্রেনের ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে ৩ এপ্রিল থেকে। সোমবার দুপুরের আগ পর্যন্ত আমরা শৃংখলাবদ্ধভাবে সবকিছু করেছিলাম। কিন্তু কাল দুপুরের পর থেকে যাত্রীদের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের ট্রেনে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও তাদের আটকাতে পারেনি।”